যুদ্ধবিরতির আলোচনায় কাতার যাচ্ছে ইসরায়েলি প্রতিনিধি দল

গাজা যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি সমঝোতার বিভিন্ন শর্তের বিষয়ে আলোচনার জন্য কাতারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। সোমবার তারা রওনা দেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। ওয়াশিংটন বলেছে, যুদ্ধবিরতির সমঝোতার সম্ভাবনা রয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র গাজায় শিগগিরই একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে চাপের মুখে রয়েছে ইসরায়েল। একই সঙ্গে গাজা উপত্যকার রাফা শহরে আক্রমণ বন্ধের চাপেও রয়েছে দেশটি। 

সূত্রটি বলেছে, সামরিক ও গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত ইসরায়েলি প্রতিনিধি দলকে আলোচনায় সমর্থন একটি অপারেশনাল সেন্টার তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাদের দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে প্রস্তাবিত ফিলিস্তিনি বন্দিদের যাচাই করা। জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে এসব বন্দিদের মুক্তির দাবি করে আসছে হামাস।

ইসরায়েলি প্রতিনিধি দল পরামর্শ দিয়েছে, গাজা যুদ্ধের চলমান শান্তি আলোচনা যেকোনও সময়ের চেয়ে দীর্ঘ হচ্ছে। ফেব্রুয়ারিতে এই উদ্যোগ গতি পেয়েছিল। ওই সময় হামাস সাড়ে চার মাসের এক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু ইসরায়েল তা প্রত্যাখ্যান করে। 

গত সপ্তাহে প্যারিসে ইসরায়েলি কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্র, মিসর এবং কাতারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে জিম্মি মুক্তি চুক্তির শর্ত নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে সেই আলোচনায় হামাসের উপস্থিতি ছিল না।

হোয়াইট হাউস বলেছে, একটি জিম্মি চুক্তির রূপরেখা সম্পর্কে একটি বোঝাপড়া হয়েছে। যদিও আলোচনা এখনও চলমান। শনিবার রাতে ইসরায়েলি প্রতিনিধিদল দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভাকে এই অগ্রগতির বিষয়ে অবহিত করে।

মিসরীয় নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েল এবং হামাসের প্রতিনিধিদের আলোচনা মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে হবে, তারা একই শহরে অবস্থান করলেও মুখোমুখি বৈঠক হবে না। চলতি সপ্তাহে প্রথমে কাতার ও পরে কায়রোতে এই আলোচনা হবে।

ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে এই আলোচনার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। সোমবার কাতারি কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকেও কিছু বলা হয়নি।

সংঘাতে লিপ্ত পক্ষগুলোর নিজেদের প্রকাশ্য অবস্থানে এখনও বিস্তর ফারাক রয়েছে। গাজা উপত্যকা শাসনকারী হামাস বলে আসছে, গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার ও যুদ্ধের অবসান না হলে তাদের হাতে থাকা শতাধিক ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে না।

আর ইসরায়েল বলে আসছে, জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে সাময়িক যুদ্ধবিরতির জন্য শুধু আলোচনা করবে তারা। হামাস পুরোপুরি নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত তারা অভিযান বন্ধ করবে না এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য গাজার সামগ্রিক নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে থাকবে।

উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় আক্রমণ চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। ওই দিন হামাসের হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১২০০ জন নিহতের জবাবে এই হামলা চালাচ্ছে তারা। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের মতে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।