ভিয়েতনামের দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি চিড়িয়াখানায় একাধিক বাঘ, তিনটি সিংহ ও একটি চিতাবাঘের মৃত্যুতে বার্ড ফ্লু’র প্রাদুর্ভাবের কারণে সন্দেহ করা হচ্ছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ডং নাই প্রদেশের ম্যানগো গার্ডেন রিসোর্টে মৃত দুই বাঘের দেহ থেকে নেওয়া নমুনায় বার্ড ফ্লু’র এইচ৫এন১ স্ট্রেন শনাক্ত হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
ডং নাই প্রদেশের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা ফান ভ্যান ফুক জানান, গত মাসের শুরুর দিকে চিড়িয়াখানায় ২০টি বাঘ মারা যায়, যাদের খাবারে মুরগি ছিল।
তিনি বলেন, বাঘগুলো সম্ভবত অসুস্থ মুরগি থেকে সংক্রামিত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এখন মুরগির উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
এর আগে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, হো চি মিন শহরের কাছের লং আন প্রদেশের মাই কুইন সাফারি পার্ক এবং ডং নাই প্রদেশের ভুয়োন শোয়াই চিড়িয়াখানায় আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে মোট ৪৭টি বাঘ, তিনটি সিংহ এবং একটি চিতাবাঘ মারা গেছে।
ভিয়েতনামের সরকারি বার্তা সংস্থা ভিএনএ বুধবার জানিয়েছে, জাতীয় প্রাণী স্বাস্থ্য নির্ণয় কেন্দ্রের পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী, প্রাণীগুলোর মৃত্যু এইচ৫এন১ টাইপ এ ভাইরাসের কারণে হয়েছে।
ভিএনএর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই প্রাণীদের সঙ্গে সংস্পর্শে থাকা কোনও চিড়িয়াখানার কর্মীর শ্বাসতন্ত্রের উপসর্গ দেখা যায়নি।
ভিয়েতনামের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কাজ করা এনজিও এডুকেশন ফর নেচার ভিয়েতনামের (ইএনভি) মতে, ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ ভিয়েতনামে বন্দি অবস্থায় ৩৮৫টি বাঘ ছিল। এর মধ্যে প্রায় ৩১০টি ব্যক্তিমালিকানাধীন খামার ও চিড়িয়াখানায় রাখা হয় এবং বাকিগুলো রাষ্ট্রায়ত্ত স্থাপনায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ২০২২ সাল থেকে স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণে প্রাণঘাতী প্রাদুর্ভাবের সংখ্যা বেড়েছে, যার মধ্যে এইচ৫এন১ অন্যতম। সংস্থাটি বলেছে, এই সংক্রমণ মানুষের মধ্যে হালকা থেকে তীব্র হতে পারে এবং কিছু ক্ষেত্রে মারাত্মক হতে পারে।
ভিয়েতনাম মার্চ মাসে এই ভাইরাসে এক মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ডব্লিউএইচওকে জানিয়েছিল। থাইল্যান্ডে ২০০৪ সালে বিশ্বের বৃহত্তম প্রজনন কেন্দ্রে বার্ড ফ্লু সংক্রমণে বহু বাঘ মারা যায় বা নিধন করা হয়।