সিরিয়ায় নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চার বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্রোহী নেতা আহমেদ আল-শারা। রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) সৌদি রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম আল-আরাবিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেছেন।
সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে উৎখাতের পর থেকে তার বিদ্রোহী সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) প্রথমবারের মতো সম্ভাব্য নির্বাচনের একটি সময়সীমা নির্ধারণ করেছে।
শারা বলেন, নতুন একটি সংবিধান খসড়া করতে তিন বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এছাড়া, আসাদ শাসনের পতনের পর জনসেবায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে আরও এক বছর সময় প্রয়োজন হতে পারে।
তিনি জানান, বৈধ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সিরিয়ার আইনি কাঠামো পুনর্গঠন এবং একটি বিস্তৃত জনশুমারি পরিচালনা জরুরি।
শারা অতীতে আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি নামে পরিচিত ছিলেন। চলতি মাসের শুরুতে আসাদের পতনের পর সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের নেতৃত্বে রয়েছেন।
এইচটিএস একসময় জিহাদি সংগঠন হিসেবে পরিচিত ছিল এবং ইসলামি আইন (শরিয়া) প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সহিংস পন্থা অবলম্বন করত। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংগঠনটি সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে।
শারা জানান, সংগঠনটি জাতীয় সংলাপ সম্মেলনে বিলুপ্ত হবে। তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
জাতীয় সংলাপটি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়ায় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য নতুন নেতৃত্বের প্রথম পরীক্ষা হতে পারে।
সিরিয়া একটি বহুজাতিক ও বিভিন্ন ধর্মের মানুষের রাষ্ট্র। এখানে কুর্দি, আর্মেনিয়ান, আসিরিয়ান, খ্রিস্টান, দ্রুজ, আলাউই শিয়া এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নি আরবসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী বসবাস করে। শারার দল সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং স্বাধীনতা সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাজ্যভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, আসাদ অনুগতদের বিরুদ্ধে দমন অভিযানে গত এক সপ্তাহে প্রায় ৩০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আসাদপন্থি যোদ্ধা, সাবেক সেনাসদস্য ও তথ্যদাতা রয়েছেন। সংস্থার প্রধান রামি আব্দেল রহমান বলেন, স্থানীয় জনগণের সহায়তায় এসব গ্রেফতার অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, এ সপ্তাহে আসাদের মিলিশিয়া সদস্যদের লক্ষ্য করে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি