গাজায় ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ ও খাদ্য সংকটের মধ্যেই ‘দুঃখের ঈদ’ উদযাপন

গাজার ফিলিস্তিনিরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করলেও তাদের কাছে আনন্দ করার কিছুই ছিল না। কারণ খাদ্যের মজুদ দ্রুত ফুরিয়ে আসছে এবং ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের কোনও শেষ নেই। রবিবার (৩০ মার্চ) রমজানের শেষ দিনেও ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। ধ্বংসস্তূপে পরিণত মসজিদগুলোর বাইরে অনেকেই ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

ঈদ সাধারণত একটি আনন্দময় উৎসব, যেখানে পরিবারগুলো একত্রিত হয়ে ভোজের আয়োজন করে এবং শিশুদের জন্য নতুন পোশাক কেনে। কিন্তু গাজার ২০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি এখন শুধুই বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

যিনি দেইর আল-বালাহ শহরে খোলা জায়গায় ঈদের নামাজ আদায় করেছেন আদেল আল-শায়ের। তিনি এই ঈদকে দুঃখের ঈদ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, আমরা আমাদের প্রিয়জনদের, সন্তানদের, আমাদের জীবন ও ভবিষ্যৎ হারিয়েছি। আমরা আমাদের শিক্ষার্থী, স্কুল এবং প্রতিষ্ঠানগুলো হারিয়েছি। আমরা সবকিছু হারিয়েছি।

কাঁদতে কাঁদতে তিনি জানান, তার পরিবারের ২০ জন সদস্য ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে, যার মধ্যে চারজন ছোট ভাতিজা কয়েকদিন আগেই প্রাণ হারিয়েছে।

ইসরায়েল দুই মাসের নাজুক যুদ্ধবিরতি হঠাৎ শেষ করে গত ১৮ মার্চ গাজায় তীব্র বিমান হামলা ও স্থল অভিযান শুরু করে। এরপর থেকে ইসরায়েল শত শত ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে এবং টানা চার সপ্তাহ ধরে গাজায় কোনও খাদ্য, জ্বালানি বা মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেয়নি।

আরব মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে এবং হামাস জানিয়েছে যে, তারা মিশর ও কাতারের একটি নতুন প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। যদিও এর সুনির্দিষ্ট বিস্তারিত তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। ইসরায়েল বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমন্বয় করে নিজেদের একটি প্রস্তাব এগিয়ে নিয়েছে, যা আলোচনা করা হচ্ছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি গণহত্যায় এখন পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।