ইরানের রাজধানী তেহরানে শুক্রবার সন্ধ্যায় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম। ধারণা করা হচ্ছে, একই দিনে দ্বিতীয়বারের মতো হামলা হচ্ছে শহরটিতে। এই এলাকায় দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কার্যালয় ও প্রেসিডেন্টের দফতর অবস্থিত।
তেহরান থেকে আল জাজিরার সংবাদদাতা জানান, কয়েক মিনিট আগে তার পেছনে তেহরানের মধ্যাঞ্চলে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হতে দেখা গেছে। এগুলো হামলা মোকাবিলার চেষ্টা করছিল।
তিনি আরও বলেছেন, বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং তেহরানের ভেতরে ও বাইরে এবং আশপাশের শহরগুলোতেও বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারাও তেহরান শহরে আবারও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে দাবি করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে রাজধানী তেহরানে নতুন করে হামলার দৃশ্য দেখা গেছে। ইরানের কিছু মিডিয়াতেও এসব ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, পশ্চিম তেহরানসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া গেছে।
ইরানি বার্তা সংস্থা মেহের জানিয়েছে, ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় প্রধান শহর ইস্পাহানে শুক্রবার একটি বড় বিস্ফোরণ শোনা গেছে। এই প্রদেশে বেশ কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনা রয়েছে।
এর আগে শুক্রবার ভোরে চালানো হামলা ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা, সামরিক ঘাঁটি এবং শীর্ষ কর্মকর্তাদের আবাসিক ভবনে করা হয় বলে জানায় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) নতুন এক সতর্ক বার্তায় বলেছে, ইসরাইলি বাসিন্দাদের সুরক্ষিত স্থানের কাছাকাছি থাকতে এবং খোলা এলাকায় চলাচল সীমিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, সমাবেশ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যদি কোনও সতর্কতা জারি করা হয়, তাহলে সরকারি হালনাগাদ না পাওয়া পর্যন্ত লোকদের সুরক্ষিত স্থানে থাকতে হবে।
এর আগে ইরানে ইসরায়েলের বহুমাত্রিক হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র সতর্কতা জারি করে জানায়, আঞ্চলিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ইরাকের আকাশসীমা দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন বা রকেট অতিক্রম করতে পারে। নিরাপত্তা সতর্ক বার্তায় বলা হয়, ইরাক দেশের সব বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রেখে আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে।
সতর্ক বার্তায় বলা হয়, আকাশপথে যদি এমন কিছু লক্ষ করা যায়, তবে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করুন, খোলা জায়গায় বের হবেন না।
এদিকে ইসরায়েলি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সাচি হানেগবি শুক্রবার বলেন, সামরিক হামলার মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে পুরোপুরি ধ্বংস করা সম্ভব নয়।
তবে এই হামলা দীর্ঘমেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে একটি চুক্তির পথ তৈরি করতে পারে, যা ইরানের পারমাণবিক পরিকল্পনা সম্পূর্ণভাবে থামাতে সক্ষম হবে বলে মত দেন তিনি।
সূত্র: রয়টার্স, আল-জাজিরা, বিবিসি