ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর বৈঠকে গাজার ফিলিস্তিনিদের বিতাড়নের প্রস্তাবে বিতর্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হোয়াইট হাউজে এক বৈঠকে গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বিতাড়নের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছেন। সোমবার (৭ জুলাই) এক নৈশভোজে এই বৈঠক হয়। এই প্রস্তাবকে অনেকেই ‘জাতিগত নিধনের’ সমার্থক বলে নিন্দা করছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

হোয়াইট হাউজের ব্লু রুমে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় কাতারে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা চলছিল। নেতানিয়াহু বলেন, ফিলিস্তিনিরা চাইলে গাজাতেই থাকতে পারবে, আবার চাইলে চলে যাওয়ার সুযোগও পাবে। এটি যেন কারাগার না হয়ে মুক্ত পছন্দের জায়গা হয়।

তিনি আরও বলেছেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি এমন দেশ খুঁজে পেতে, যারা ফিলিস্তিনিদের একটি ‘ভবিষ্যৎ’ দিতে আগ্রহী। আমাদের ধারণা, কয়েকটি দেশ রাজি হতে যাচ্ছে।

ট্রাম্প বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে আমরা অনেক সহযোগিতা পাচ্ছি। সুতরাং কিছু ভালো হতে যাচ্ছে।

তবে বিশ্লেষক ও মানবাধিকার আইনজীবীরা এই প্রস্তাবকে আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। আইন বিশেষজ্ঞ রালফ উইল্ড বলেন, ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক স্থানান্তর আন্তর্জাতিক অপরাধ। এটি যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং গণহত্যার পর্যায়ে পড়ে।

আল জাজিরার জর্ডান প্রতিনিধি হামদা সালহুত বলেছেন, ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে এটিকে ‘স্বেচ্ছা স্থানান্তর’ নামে চালানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু বাস্তবে এটি একটি পরিকল্পিত নির্মূল প্রক্রিয়া।

ইসরায়েলের সাবেক কূটনীতিক আলন পিঙ্কাস মন্তব্য করেছেন, এই ধরনের পরিকল্পনা দুর্যোগ ডেকে আনবে। এমনকি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী বললেও এর বাস্তব রূপ নেই।

ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস স্পষ্ট করেছে, তারা কেবল বন্দি বিনিময়, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং পূর্ণ যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে জিম্মিদের মুক্তি দিতে রাজি। অন্যদিকে নেতানিয়াহু বলছেন, হামাসকে আত্মসমর্পণ করে নিরস্ত্র ও নির্বাসিত হতে হবে। তবেই যুদ্ধ শেষ হবে।