মানবজমিন সম্পাদকসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার চায় অ্যামনেস্টি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংগঠনটির দক্ষিণ এশীয় ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মদি এক বিবৃতিতে সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানিয়েছেন।

অ্যামনেস্টি

গত ৯ মার্চ মানবজমিন  সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শেখর। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, গত ২ মার্চ দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর নির্দেশে আল আমিন নামে একজন প্রতিবেদক ‘পাপিয়ার মুখে আমলা, এমপি, ব্যবসায়ীসহ ৩০ জনের নাম’ শীর্ষক সংবাদ পরিবেশন করে। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় ২৫ থেকে ৩০ জনের নামসহ একাধিক তালিকা প্রকাশ ও ছড়িয়ে দেওয়া হয় যাতে বিভিন্ন সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তাসহ মাগুরার সংসদ সদস্য  মো. সাইফুজ্জামান শিখরের নামও রয়েছে। এ ঘটনায় সংক্ষুব্ধ হয়ে সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগ এনে মানবজমিন সম্পাদক, সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক এবং ফেসবুকে তালিকাগুলো প্রকাশ ও শেয়ারকারী ৩০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করা হয় বলে মঙ্গলবার  জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম মুন্সি।

মামলার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশীয় ক্যাম্পেইনার বলেন, ‘মানবজমিন সম্পাদক ও অপর ৩১ জনের বিরুদ্ধে আর কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা সরকারকে ধৈর্য্য ধারণ এবং অবিলম্বে মামলাটি প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি’।

বিবৃতিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করে বলা হয়, প্রভাবশালী ব্যক্তি ও পুলিশসহ অন্য রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো কীভাবে আইনটি মানুষের বিরুদ্ধে নির্বিচারে ব্যবহার করছে তার উদাহরণ এই মামলা।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আইনটি পর্যালোচনার আহ্বান জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।  

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০‌১৮ সালের অক্টোবরে সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাসের ১১ মাসের মধ্যে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে প্রায় চারশোটি মামলা দায়ের করা হয়। সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে এর মধ্যে দুই শতাধিক মামলা বাতিল হয়ে গেছে।