রুশ বিপ্লবের কথা ভুলে যেতে বললেন পুতিন

রাশিয়ার বিপ্লবের শতবর্ষপূর্তি হবে মঙ্গলবার। বিংশ শতকের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনার একটি হচ্ছে এই রুশ বিপ্লব। তবে ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বাধীন বর্তমান রুশ সরকার শতবর্ষ উদযাপন করছে না। এমনকি রুশ বিপ্লবের স্বীকৃতি দিতেও নারাজ রাশিয়া।

636450602047450422-AFP-AFP-TQ86W

পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, রুশ বিপ্লবের  শতবর্ষ উদযাপনের কোনও পরিকল্পনা নেই রাশিয়ার।  তিনি বলেছেন, এখানে উদযাপনের কী আছে?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এখনকার রাশিয়ায় রাজনৈতিক স্বাধীনতা খর্বের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে সরকার নাগরিকদের বিদ্রোহ করার চেতনা জাগ্রত করতে চায় না।

প্রাগভিত্তিক ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স-এর রুশ রাজনীতি বিশেষজ্ঞ মার্ক গ্যালিওতি বলেন, বিপ্লবের শতবর্ষ বলে কিছু নেই ভাব ধরার কোনও কিছু নেই। কিন্তু স্বৈরাচারী সরকার বিপ্লবের ঘটনা উদযাপন করার ঝুঁকি নিতে চায় না।

১৯৯১ সালে সোভিয়েতের পতনের পর পুতিন জাতীয়তাবাদী অবস্থান নিয়েছিলেন। আর কিছুদিন ধরে তিনি কমিউনিস্ট শাসন ব্যবস্থার সমালোচক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। পুতিনের মতে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ছিল বিংশ শতকের সবচেয়ে বিপর্যয়কর ঘটনা। কিন্তু গত বছর তিনি রুশ বিপ্লবের নেতা ভ্লাদিমির লেনিনকে রাশিয়ার মধ্যে টাইম বোম্ব হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

সোমবার পুতিন বলেছেন, এই দুঃসহ অতীত আমাদের জাতীয় স্মৃতি থেকে মুছে ফেলা যাবে না। কোনও কিছু দিয়েই এই ঘটনার যথার্থতা দাবি করা যায় না।

আন্দ্রেই গালকিন নামের ইতিহাসের এক শিক্ষার্থী জানান, পুতিন জনগণের ক্ষমতার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চান না। আন্দ্রেই বলেন, বিপ্লব হলো জনগণের ভাষা এবং জনগণের এই ভাষা থাকতে নেই।

রাশিয়ার সরকার বিপ্লবের  পালন না করলেও দেশটিতে সক্রিয় একটি কমিউনিস্ট পার্টি দেশজুড়ে শতবর্ষ পালন করবে। শতবর্ষ উদযাপন না করায় রুশ সরকারের সমালোচনাও করেছে পার্টিটি। দলটির এক আইনপ্রণেতা বলেন, ক্রেমলিনের পক্ষে শতবর্ষ পালন করা বা গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা প্রত্যাশিত নয়। আমার কাছে এটি ভুল। অতীতের বিপ্লব থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।

১৯১৭ সালের ৭ নভেম্বর ভ্লাদিমির লেনিনের নেতৃত্বে রুশ বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল। ওই সময় প্রাদেশিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা সোভিয়েতের হাতে ন্যস্ত করা হয়। রুশ সরকার প্রতি বছর ৭ নভেম্বর প্যারেডের মধ্য দিয়ে বিপ্লবের বার্ষিকী উদযাপন করত। কিন্তু পুতিন দায়িত্ব নেওয়ার পর ছুটির দিনটি জাতীয় ঐক্য দিবস হিসেবে পালিত হয়। সূত্র: ইউএসএ টুডে।