নাভালনিকে ৩০ দিনের আটকাদেশ

রাশিয়ার বিরোধী নেতা আলেক্সাই নাভালনিকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়েছে মস্কোর একটি আদালত। বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে জার্মানিতে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরে বিমানবন্দরেই আটক হন তিনি। পরে আদালতে নেওয়া হলে, বিচারক তাকে প্যারোল পর্যালোচনার আগে পর্যন্ত হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। প্যারোল পর্যালোচনায় কয়েক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এই কঠোর সমালোচকের। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

২০১৪ সালে একটি মামলায় নাভালনিকে দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত। ওই মামলায় প্যারোলে থাকলেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাজিরা দিতে ব্যর্থ হন তিনি। চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলে তাকে গ্রেফতার করা হবে বলে আগে থেকেই ঘোষণা দিয়ে রাখে রুশ কর্তৃপক্ষ। সে অনুযায়ী স্থানীয় সময় রবিবার রাতে জার্মানি থেকে মস্কোর শেরেমিতিয়েভো বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরপরই তাকে আটক করে পুলিশ।

পরে নাভালনিকে বিমানবন্দরের কাছে একটি পুলিশ স্টেশনে স্থাপন করা আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে কেবলমাত্র ক্রেমলিনের ঘনিষ্ঠ দুইটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। সেখান থেকে এক ভিডিও বার্তায় নাভালনি আদালতের শুনানিকে আইনহীনতা সর্বোচ্চ পর্যায় বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘এখানে যা ঘটছে তা অসম্ভব।’ নাভালনির মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ ভিডিওটি অনলাইনে পোস্ট করেছেন। তাতে দেখা গেছে, সমর্থকদের রাজপথে বিক্ষোভের আহ্বান জানাচ্ছেন তিনি।

আদালতে নাভালনির শুনানি চলার সময়ে পুলিশ স্টেশনের বাইরে জমাট বাধা আবহাওয়া উপেক্ষা করেই সমবেত হয় তার শত শত সমর্থক। তারা অবিলম্বে নাভালনির মুক্তির দাবি জানায়।

পরে রুশ পুলিশ সদস্যদের নাভালনিকে মস্কোর একটি কারাগারে নিয়ে যেতে দেখা যায়। নাভালনির আইনজীবী ভাদিম কোবজেভ বলেছেন, আদালতের এই ‘অবৈধ’ আদেশের বিরুদ্ধে তারা আপিল করবেন।

এদিকে, অবিলম্বে রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সাই নাভালনির মুক্তি দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ। রাশিয়ায় আশ্রয় নেওয়া মার্কিন হুইসেল ব্লোয়ার এডওয়ার্ড স্নোডেনও নাভালনিকে গ্রেফতারের সমালোচনা করেছেন। এক টুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন পুতিনের সমালোচককে গ্রেফতার করা হলো সোভিয়েত আমলের ভুলের পুনরাবৃত্তি করা।

উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে এক নির্বাচনি প্রচারণা শেষে মস্কোয় ফেরার পথে বিমানের মধ্যে বিষক্রিয়ায় নাভালনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। কোমায় চলে গেলে দুই দিন পরে তাকে চিকিৎসার জন্য জার্মানি নিয়ে যাওয়া হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর এখন অনেকটাই সুস্থ তিনি। জার্মানি, ফ্রান্স ও সুইডেনের ল্যাবে পরীক্ষা করে নাভালনিকে বিষ প্রয়োগের সত্যতা প্রমাণিত হলেও তা মানতে নারাজ ক্রেমলিন।