আগামীতে সন্তান জন্মদানে নারীর ভূমিকা ফুরিয়ে যাবে!

আগামীতে নারীর ডিম্বাণু ছাড়াই সন্তান দেওয়া সম্ভব হলে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, ডিম্বানু ছাড়া শুক্রাণু থেকে সন্তান জন্মের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন তারা। বিজ্ঞানীদের এ চেষ্টা সফল হলে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন যুগের সূচনা হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। বিজ্ঞানীদের দাবি, অদূর ভবিষ্যতে ডিম্বাণুর বিকল্প হিসেবে যে কারো ত্বক কোষের মাধ্যমেই নিষিক্ত করা যাবে পুরুষের শুক্রাণু। নারীর প্রয়োজন হবে না।

বিস্ময়কর এ ঘোষণাটি এসেছে যুক্তরাজ্যের বাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের কাছ থেকে। তাদের গবেষণার ফল সম্প্রতি নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।তাতে বলা হয়েছে,  স্বাভাবিকভাবে ডিম্বাণুর ভেতরে শুক্রাণুর প্রবেশের পর এর ডিএনএ সজ্জা পুনর্গঠিত হয়। আর এ থেকেই জন্ম নেয় ভ্রূণ। তবে ঠিক কোন কারণে এই ডিএনএ সজ্জার পুনর্গঠন- তা এখনো উদ্ঘাটন করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। তারা জানান, কোনও দেহ কোষকে ছদ্ম ডিম্বাণুতে রূপান্তর করা হলে একই ফল পাওয়া যাবে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রাণ সৃষ্টির মূল উপাদান লুকিয়ে আছে শুক্রাণুর ভেতরে। ডিম্বাণুর কাজ শুধু শুক্রাণুকে ধারণ করে সেটি ভ্রূণে রূপান্তরে সহায়তা করা। আর ডিম্বাণুর এই কাজটি নারী-পুরুষ যে কারো ত্বকের কোষ দিয়েই করা সম্ভব।

এরই মধ্যে অনিষিক্ত ডিম্বাণুতে রাসায়নিক রূপান্তর ঘটিয়ে ছদ্ম ডিম্বাণু তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। আর সেই সেই ছদ্ম ডিম্বাণুতে আকৃষ্ট শুক্রাণু থেকে জন্ম নিয়েছে ইঁদুর ছানা। গবেষণায় প্রতি চারটি ভ্রূণ থেকে জন্ম নিয়েছে একটি করে ইঁদুর। এগুলোর তিন প্রজন্ম পর্যবেক্ষণ শেষে এসেছে বিজ্ঞানীদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।

গবেষক দলের সদস্য ডা. টনি পেরি জানান, কিছু মানুষ বলেন ভ্রূণ সৃষ্টির জন্য ডিম্বাণু প্রয়োজন। তারা যে পুরোপুরি ভুল তা বলা যাবে না। তবে সম্ভবত ভ্রূণের জন্য ডিম্বাণু অবশ্য প্রয়োজনীয় কোনও শর্ত নয়। আজই হয়ত সম্ভব হবে না তবে এমন একদিন আসবে যখন সাধারণ ত্বক কোষ ব্যবহার করেই ভ্রূণ জন্ম দেওয়া যাবে।

বিজ্ঞানীরা আরও জানান, এই গবেষণা সফল হলে সন্তান জন্মের ক্ষেত্রে গৌণ হয়ে পড়বে নারীর ভূমিকা। এমনকি পুরুষ তার শুক্রাণু ও নিজের দেহকোষ কাজে লাগিয়েই জন্ম দিতে পারবে সন্তান। সূত্র: বিবিসি।

/এএ/