যৌন কেলেঙ্কারিতে হুমকির মুখে বাংলাদেশে অক্সফামের প্রকল্প

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম কর্মকর্তার যৌন কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশের একটি প্রকল্প হুমকির মুখে পড়েছে। এই শীর্ষস্থানীয় দাতব্য সংস্থাটির সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশে এ প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছিল জন লুইস ফাউন্ডেশন।  যুক্তরাজ্যে একাধিক চেইন শপের মালিক এই  জন লুইস। 

অক্সফামের যৌন কেলেঙ্কারিতে হুমকির মুখে বাংলাদেশের একটি প্রকল্প

জন লুইস ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, অক্সফামের সঙ্গে তারা বাংলাদেশের বস্তি এলাকায় ২ লাখ ৫০ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড ব্যয়ে একবছরের জন্য যে যৌথ প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছিল,  তা কঠোরভাবে পর্যালোচনা করবে এবং এই বিষয়ে অক্সফামের কাছে নিশ্চয়তা চাইবে।

অক্সফামকে ঘিরে বিতর্ক ও হাইতিতে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় গভীর উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছে ফাউন্ডেশনটি।

‘এম্পাওয়ারিং উইম্যান অ্যান্ড বিল্ডিং সাসটেইনেবল লাইভলিহুডস ইন আরবান বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই প্রকল্পটি বাংলাদেশের বস্তিতে বসবাসকারী নারীদের ক্ষমতায়ন ও জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা জন লুইসের ব্যবসায় পণ্য সরবরাহকারী।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। এ প্রকল্পের লক্ষ্য— বাংলাদেশের বস্তি এলাকা, যেখানে জন লুইসের পণ্যের সরবরাহকারীরা বাস করেন, সেখানকার ২৫ হাজার দরিদ্র ও প্রান্তিক নারী ও মেয়েদের সহযোগিতা করা।

হাইতিতে অক্সফাম কর্মকর্তার যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর জন লুইস ফাউন্ডেশন প্রকল্পটি পর্যালোচনার উদ্যোগ নিলো। অক্সফাম জানায়, কেলেঙ্কারির ঘটনায় ২০১১ সালে হাইতিতে অক্সফাম থেকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয় রোল্যান্ড ভ্যান হাউওয়ারমিরেনকে।

রোল্যান্ড পরে এ ঘটনার কথা গোপন রেখে রোল্যান্ড বাংলাদেশে অ্যাকশন অ্যাগেইনস্ট হাঙ্গার-এর প্রধান হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশে দায়িত্বে ছিলেন।

ফ্রান্সভিত্তিক অ্যাকশন অ্যাগেইনস্ট হাঙ্গার জানায়, তারা রোল্যান্ডকে বাংলাদেশে নিয়োগ দেওয়ার আগে পরীক্ষা, সাক্ষাৎকার, সুপারিশমালা নিরীক্ষা এবং সাবেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগের প্রক্রিয়া যথাযথভাবে পালন করেছে।

প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের নথি অনুসারে, অ্যাকশন অ্যাগেইনস্ট হাঙ্গারে কাজ করার সময় রোল্যান্ডের বিরুদ্ধে কোনও ধরনের যৌন হয়রানির বিষয়ে সতর্কতা পাইনি। এখন আমাদের সংস্থায় কাজ করার সময় তার আচরণ গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আমরা তা সম্পূর্ণ প্রকাশে এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতায় পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী প্রেনি মর্ডাউন্ট যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সহযোগিতা খাতে যৌন নিপীড়ন ও শোষণের বিরুদ্ধে সুরক্ষামূলক মানদণ্ড ঠিক করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মানুষের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা জরুরি। আমাদের  কর্মীদের অবশ্যই আইনি কর্তব্যের পাশাপাশি নৈতিক দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করা উচিত ।

দাতব্য সংস্থাগুলোর কাজ তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত যুক্তরাজ্যের চ্যারিটি কমিশন অক্সফামের যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় একটি বিধিবদ্ধ তদন্ত শুরু করেছে। অক্সফামের সদর দফতর অক্সফোর্ডে অবস্থিত। সহযোগিতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বিশ্বের প্রায় ৯০টি দেশে কাজ করছে এই দাতব্য সংস্থাটি।