যুক্তরাজ্যে চরমপন্থী প্রচারক আনজেম চৌধুরী কারামুক্ত

শুক্রবার ব্রিটিশ নাগরিক আনজেম চৌধুরীকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানোর দায়ে চরমপন্থী এই ইসলাম প্রচারককে সাজা দেওয়া হয়েছিল। কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও তাকে গোয়েন্দাদের কড়া নজরদারির মধ্যে থাকতে হবে। ৫১ বছর বয়সী আনজেম চৌধুরী তার সাজার প্রায় অর্ধেক সময় কাটিয়েছে বেলমার্শ হাই সিকিউরিটি জেলে। সাড়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের মধ্যে এখন বাকি সময় সে কারাগারের বাইরে কাটাবে। এর জন্য তাকে মেনে চলতে হবে ২৫টি শর্ত।gettyimages-95720859
এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে ‘প্রবেশন হোস্টেলে’ বাধ্যতামূলক বসবাস, যেখানে তার আচরণ ও কথাবার্তার বিষয়ে গভীরভাবে নজরদারি করা হবে। এই সময়ের মধ্যে আনজেম চৌধুরী নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে বের হতে পারবে না, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথাও বলতে পারবে না। প্রচার-প্রচারণা চালানোও নিষিদ্ধ তার জন্য।
আনজেম চৌধুরী যে মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে চায় সেই মসজিদের তথ্য আগে থেকে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। মসজিদের ভেতর তার কর্মকাণ্ডও গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের আওতায় থাকবে। লন্ডন মেট্রোপলিটান পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থা এমআইফাইভ তার ওপর নজরদারি চালাবে। সাড়ে পাঁচ বছরের সাজার মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এই ব্যবস্থা ।
আরও যেসব শর্ত আনজেম চৌধুরীকে মেনে চলতে হবে সেসবের মধ্যে রয়েছে: রাতের বেলা বের না হওয়া, জঙ্গিবাদ প্রচারের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বা সন্দেহভাজন কারোর সঙ্গে পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে সাক্ষাৎ না করা, নিজস্ব মোবাইলফোন না রাখা, তত্ত্বাবধান ছাড়া ইন্টারনেট ব্যবহার না করা ইত্যাদি। এসব শর্তের কোনওটির ব্যত্যয় হলে কারাগারের বাইরে সাজার নেয়াদ পূর্ণ করার সুযোগ বাতিল করে দেওয়া হবে।
আনজেম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ইসলামি সংগঠন ‘আল মুহাজিরুনকে’ ২০১০ সালে যুক্তরাজ্য সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছিল। সরকারের ভাষ্য, সংগঠনটি ইসলামি স্টেটের নেতা আবু বকর আল বাগদাদির প্রতি আনুগত। জঙ্গিবাদ প্রচারের দায়ে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক আনজেম চৌধুরীকে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে লন্ডনের ওল্ড বেইলি আদালত সাজা দিয়েছিল।
বিচারক হলরয়েড সাড়ে পাঁচ বছরে কারাদণ্ড দেওয়ার রায়ে তাকে একজন ‘বিপদজনক’ ব্যক্তি এবং ‘অপর জঙ্গিদের চেয়ে বেশি চালাক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। ওই মামলায় আনজেম চৌধুরীর সঙ্গে তার সহযোগী মোহাম্মেদ রহমানেরও সাড়ে পাঁচ বছরে কারাদণ্ডের সাজা হয়েছিল।
জাস্টিস হলরয়েডের ভাষ্য, আনীত অভিযোগের বিষয়ে আনজেম চৌধুরীর মধ্যে কোনও অনুশোচনা দেখা যায়নি। সুযোগ পেলেই আবার একই ধরণের প্রচারণা চালাতে শুরু করবে সে।