রাজনৈতিক আশ্রয়: বিএনপি সমর্থককে আপিলের অনুমতি

বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এক বাংলাদেশিকে রাজনৈতিক আশ্রয়ের মামলায় আপিলের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্যের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল জার্সির আদালত। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির দাবি, বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হলে রাজনৈতিক আদর্শের কারণে তাকে হত্যা করা হবে এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাকে বিপদগ্রস্ত করবে। দেশটির আদালত তাকে আপিল আবেদন করার সুযোগ দিয়েছে। আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম প্রকাশ না করতে। তাকে মামলার সূত্রে ‘এ’ নামে সম্বোধন করা হবে।jersey-royal-courthouse01f2d7a8f6bd683ab184ff0c0040cfad
বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ২০১২ সালে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও, তিনি তখন থেকে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে তাকে জার্সি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তার রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আইন কর্মকর্তা টিম লি কক আদালতের এক নথিতে মন্তব্য করেছেন, ‘সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনের ভিত্তি তার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি এবং বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ক্ষমতাসীন দল হওয়ার বাস্তবতা। তিনি দাবি করেছেন, বিএনপিসহ যারাই বিরোধিতা করে আওয়ামী লীগ তাদের ভুক্তভোগী বানায়। ভুক্তভোগী বানানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী জড়িত। তারা এমন কি বিরোধীদের হত্যাও করে। ’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আবেদনকারী ২০০৭ ও ২০০৮ সালে বিএনপির পক্ষে মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন। মিছিলে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সেই সূত্রে পুলিশ তাকে ও তার মতো আরও অনেকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনে।’
জার্সির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশি ব্যক্তির আইনজীবীরা আদালতের কাছে যুক্তি দিয়েছেন, রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর না করে তাকে যদি বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয় তাহলে জার্সি কার্যত জেনেভা কনভেনশনের খেলাপ ঘটাবে। মানবাধিকার বিষয়ে জেনেভা কনভেনশনে ব্যক্তির জীবনের অধিকার ও স্বাধীনতার যে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে তা ক্ষুণ্ন হবে।
জার্সির অভিবাসন আইন অনুযায়ী রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থীকে তখনই কেবল শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়া যায়, যখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে মনে করে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তার দেশে ফেরত পাঠালে ধর্ম, বর্ণ, জাতীয়তা, রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিত্তিতে কারও প্রাণ না হারানোর বা স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন না করার যে নিশ্চয়তা জেনেভা কনভেনশনে দেওয়া আছে তার ব্যত্যয় ঘটবে।
বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টব্যক্তির আবেদন ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী দেইদরে মেজবুরিয়ান এবং ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেন নরম্যান বাতিল করে দিয়েছিলেন। বর্তমানে ‘রয়্যাল কোর্ট অব জার্সি’ তাকে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ দিয়েছে।