সাগর থেকে উদ্ধার পেয়ে জাহাজ ছিনতাই

লিবিয়া উপকূল থেকে শতাধিক ব্যক্তিকে উদ্ধারের পর ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছে খোদ উদ্ধারকারী জাহাজটিই। সাগর থেকে উদ্ধার পাওয়ার পর ইউরোপে অভিবাসী হতে ইচ্ছুক এসব ব্যক্তিরা যখন জানতে পারে যে তাদেরকে আবার লিবিয়াতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন তারা জাহাজের গতিপথ পাল্টাতে বাধ্য করে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, জাহাজটিকে মাল্টার দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না জাহাজের ক্যাপ্টেনের সঙ্গে।3211নৌকায় চড়ে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে ঢুকতে চাওয়া আফ্রিকার অধিবাসীরা অনেক সময়ই সাগরে দুর্ঘটনায় পতিত হন। বহনকারী নৌকাগুলো মাঝ সাগরে ডুবে গেলে তাদেরকে উদ্ধার করে ইতালীয় বন্দরে পৌঁছে দেওয়া হতো। এ কাজ যেমন করত অন্য দেশের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, তেমনি ইতালীয় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজ। ইতালি সে প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থান গ্রহণ করেছে। কিন্তু তারপরও সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
ইতালীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এলহিবলু নামের একটি জাহাজ লিবীয় উপকূল থেকে ১০৮ জনকে উদ্ধার করে। জাহাজটি উদ্ধারকৃতদের নিয়ে লিবিয়ার দিকে যেতে থাকে। কিন্তু ত্রিপলি থেকে ৬ নটিক্যাল মাইল দূরে থাকতেই জাহাজটি তার গতিপথ পরিবর্তন করে এবং মাল্টার দিকে যেতে থাকে। এদিকে এ ঘটনার প্রেক্ষিতে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেওয়া ইতালির ডানপন্থী উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও সালভেনি বলেছেন, ইতালির বন্দর তাদের জন্য বন্ধ থাকবে। তার ভাষ্য, ‘এরা অভিবাসী হতে ইচ্ছুক ব্যক্তি নয়, দস্যু। তারা ইতালিকে দেখতে পারবে শুধু দূরবীন দিয়ে।’
মাল্টার একজন সেনা কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, জাহাজটি ছিনতাইয়েরই শিকার হয়েছে। এর গতিবিধির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। জাহাজটিকে কোনওভাবেই মাল্টার বন্দরে ভিড়তে দেওয়া হবে না।
বুধবার (২৭ মার্চ) ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে, মানবপাচার প্রতিরোধে লিবিয়া উপকূলে তাদের নৌযানগুলো আর টহল দেবে না। এসব টহল নৌযানগুলো সমুদ্র থেকে বহু অভিবাসী হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে ইতালির বন্দরে নিয়ে আসত একসময়। কিন্তু ‘অপারেশন সোফিয়া’ নামের এই কার্যক্রম আর চালানো হবে না। কারণ ইতালি বলেছে, এটি চলমান থাকলে তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের যেকোনও জলযানের চলাচালের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।