সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত বাতিল, জনসনের সমালোচনা রুপা হকের

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সমালোচনা করলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুপা হক। লেবার পার্টির এই পার্লামেন্ট সদস্য সোমবার সাবেক এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণার সমালোচনা করেন। জনসনের মন্ত্রীর বিরুদ্ধে একজন নারী পরিবেশকর্মীর ওপর শারীরিক নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে।

60002ed314d034d10248987c0db7c366-5b6b1f6b66e87

২০১৫ সালে নির্বাচনী প্রচারণার সময় ওই ঘটনা ঘটে। পশ্চিম লন্ডনে নিজের আসন পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বরিস জনসন। তখন এক নারী তার সঙ্গে বিতর্কে অংশ নিতে চান। এ সময় কনজারভেটিভ পার্টির এক সদস্য জনসনের সঙ্গে কথা বলতে বাধা দিয়ে তাকে চেপে ধরেন। তখন ওই নারী বলেন, আমি তাকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করতে চেয়েছিলাম। তবে তার সমর্থকদের সামনে আমাকে চেপে ধরে সরিয়ে দেওয়াটা খুবই হতাশাজনক ছিল।  

ওই নারী বলেন, বরিস জনসন  ও তার দলের উচিত আমার কাছে ক্ষমা চাওয়া। রাজনীতিবিদদের উদাহরণ সৃষ্টি করা উচিত। বিশেষ করে নারীদের প্রতি তাদের আচরণের।’ কিন্ত এখনও তার কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি ।

ব্রেক্সিটের সমর্থন করায় অনেকদিন ধরেই বরিস জনসনের প্রকাশ্যেই সমালোচনা করে আসছেন রুপা হক। তিনি বলেন, চার বছর আগে ওই ঘটনার সময় মিছিলে তিনি নিজেই উপস্থিত ছিলেন। বরিসন জনসন তখন ছিলেন লন্ডনের মেয়র। 

রুপা হক বলেন, আন্দোলনকারীকে একজন এমপি শারীরিক নিপীড়ন করলেন আর বরিস জনসন সেটা আগের প্রধানমন্ত্রীর বিষয় বলে বাতিল করলেন। মনে হচ্ছে নতুন এই প্রধানমন্ত্রী নারীদের ওপর জোর খাটানোর ব্যাপারে আপত্তি নেই। ২০১৫ সাল থেকে তিনি এই বিষয়ে কিছুই করছেন না।

কনজারভেটিভ পার্টির এমপি মার্ক ফিল্ডের বিরুদ্ধেও এমন অভিযোগ রয়েছে। গতমাসেই তিনি এক পরিবেশবাদী কর্মীর ওপর জোর খাটিয়েছেন বলে ক্যামেরায় ধরা পড়ে। বরিস জনসন তাকে এশিয়া বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে অব্যাহতি দেন। তার বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রমও বন্ধের ঘোষণা দেন।

বরিস জনসনের মুখপাত্র বলেন, মার্ক ফিল্ড এখন আর সরকারের অংশ নন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মনে করেন এই বিষয়টি আগের সরকারের দায়িত্ব ছিল।

নতুন প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলীয় নেতারা। লেবার পার্টি নীতিবিষয়ক ছায়া মন্ত্রী লুইস হাইও রুপা হকের সঙ্গে একমত। তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে নারীদের প্রতি বরিস জনসনের আচরণ প্রতিফলিত হলো।

ব্রেক্সিটবিরোধী লেবার এমপি রুপা হক প্রথম থেকেই বরিস জনসনের সমালোচনা করে আসছেন। গত সপ্তাহেই অভিবাসী ইস্যুতে বরিস জনসনকে পার্লামেন্টে তিনি প্রশ্ন করেছিলেন যে, তিনি কথা দিয়ে কথা রাখেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমি মনে করি, যারা এদেশে বছরের পর বছর কোনও অপরাধে না জ‌ড়িয়ে  বসবাস করছে, কাজ করছে কিন্তু ট্যাক্স দিতে পারছে না, তা‌দের বিষয়টি দেখা উচিত। সত্যি বলতে আইন ইতোমধ্যেই তাদের থাকার অধিকার দিয়েছে। 

জনসন আরও বলেন, রুপা হক যেই নীতির কথা বলছেন তার আগে,  তাদের সাধারণ ক্ষমা দেওয়ার আগে আমাদের অর্থনৈতিক সুবিধা-অসুবিধা দেখতে হবে।