ব্রিটিশ প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের মামলা

ব্রিটিশ প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের একটি আদালতে মামলা করেছেন ভার্জিনিয়া জোফ্রে নামের এক নারী। দুই দশক আগে কিশোরী বয়সে প্রিন্সের ‘যৌন নির্যাতন’ ও ‘মারধরের’ শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন তিনি।

ওই নারীর অভিযোগ, যুক্তরাজ্যের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের দ্বিতীয় পুত্র প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য ১৭ বছর বয়সে তাকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে জোফ্রের অভিযোগ বরাবরই নাকচ করে আসছেন অ্যান্ড্রু।

ভার্জিনিয়া জোফ্রে-র দাবি, লন্ডন ও নিউইয়র্কে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর দ্বারা তিনি যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টেইনের বিরুদ্ধেও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেছেন তিনি।

নিউইয়র্কের শিশু নির্যাতন বিরোধী আইনের আওতায় অভিযোগ দায়ের করেছেন জোফ্রে। এই আইনে নিপীড়নকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের অধিকারের আওতা বাড়ানো হয়েছে।

জোফ্রে নতুন করে আদালতে গেলেও তার অভিযোগ নতুন নয়। দীর্ঘদিন থেকেই এমন দাবি করে আসছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে তার অভিযোগ নিয়ে মুখ খোলেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু। তার দাবি, এমন কিছুই ঘটেনি।

ব্রিটিশ রাজপরিবারের এই সদস্যের ভাষায়, ‘এটা ঘটেনি। আমি সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারি, এমনটা কখনোই ঘটেনি। ওই নারীর সঙ্গে কখনোই পরিচয় হয়েছে বলে আমার মনে পড়ছে না।‌‌’

পরবর্তীতে এক বিবৃতিতে প্রিন্স অ্যান্ড্রু বলেন, ‘জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে অবিবেচনাসুলভ সম্পর্ক রাখার জন্য আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে অনুশোচনা করে যাচ্ছি। তার আত্মহত্যার ফলে অনেক প্রশ্নের উত্তর অজানা থেকে গেলো, বিশেষ করে তার নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের জন্য। যারা এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের আমি গভীরভাবে সমবেদনা জানাই। আমি শুধু আশা করতে পারি যে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা পুনরায় নতুন করে নিজেদের জীবন গড়ে তুলতে পারবেন।’

নিউ ইয়র্কের আদালতে দায়ের করা মামলায় ভার্জিনিয়া জোফ্রে বলেন, সেই সময় লন্ডনে এপস্টেইনের একজন সহযোগীর নাম ছিল গিলেইন ম্যাক্সওয়েল। এই ম্যাক্সওয়েলের বাড়িতে তখন ভার্জিনিয়া রবার্টস নামে পরিচিত জোফ্রেকে যৌন নিপীড়ন করেছেন ডিউক।

নিউইয়র্কের শিশু নির্যাতনবিরোধী আইনকে গত বছর গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো যুগান্তকারী বলে বর্ণনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এর ফলে যারা অপ্রাপ্ত বয়সে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, যেসব অপরাধ জানা যায়নি বা বিচার হয়নি, সেগুলোর বিচার প্রাপ্তির পথ তৈরি হয়েছে।

২০১৯ সালে আইনটি জারি করা হয়। এই আইন অনুযায়ী, সময় উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার কারণে এর আগে যেসব অভিযোগ আনা যায়নি, সেসব অভিযোগ দায়ের করার জন্য এক বছর সময় দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সেই সময়সীমা এই বছরের ১৪ অগাস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সূত্র: বিবিসি।