যুক্তরাজ্যে শিশুসন্তানের সামনেই স্বামীর হাতে খুন হলেন বিশ্বনাথের শিউলি

যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি অধ্যুষিত শহর ব্রাডফোর্ডে স্বামীর ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন কুলসুমা আক্তার শিউলি নামে এক বাংলাদেশি। তার গ্রামের বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায়।

নিহত শিউলির ভাই আক্তার হোসেন যুক্তরাজ্যের ওল্ডহামে বসবাস করেন। সোমবার তিনি অভিযোগ করেন, গত শনিবার লন্ডনের স্থানীয় সময় বিকালে ৫ মাস বয়সী শিশুপুত্রের সামনেই শিউলিকে ছুরিকাঘাত করেন স্বামী হাবিবুর রহমান মাসুম। এ ঘটনার পর থেকে মাসুম পলাতক। 

পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাসুম ও শিউলি দম্পতি দুই বছর আগে সিলেটের বিশ্বনাথ থেকে যুক্তরাজ্যে আসেন। মাসুম আসেন স্টুডেন্ট ভিসায় আর স্ত্রী শিউলি আসেন মাসুমের নির্ভরশীল হিসেবে। শুরুতে ওল্ডহাম এলাকায় থাকতেন এ দম্পতি। তাদের পারিবারিক কলহ শুরু হলে একপর্যায়ে তা পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। পরে পুলিশ শিউলিকে সোশ্যাল সার্ভিসের মাধ্যমে আগের বসবাসস্থল থেকে সরিয়ে ব্রাডফোর্ডে নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা করে। কিন্তু স্বামী মাসুম পুলিশের নিষেধ না মেনে শিউলির গতিবিধি নজরদারি শুরু করেন। ঘটনার দিন ইফতারের আগে শিউলি তার শিশুপুত্রকে নিয়ে খাবার কিনতে বের হন। এ সময় আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা মাসুম শিউলিকে ধারালো ছুরি দিয়ে আক্রমণ করেন।

শিউলির ভাই আক্তার হোসেন তার বোনের খুনিকে ধরিয়ে দিতে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন। শিউলির পোস্টমর্টেম শেষে মরদেহ পেলে জানাজা ও দাফনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

দৈনিক দেশ রূপান্তরের যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি আশফাক জুনেদ সোমবার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মূলত আর্থিক অনটন, দেশ থেকে আসার পর স্বপ্নের লন্ডনের সঙ্গে বাস্তবতার আকাশ-পাতাল ফারাক যুক্তরাজ্যে সদ্য আসা বাংলাদেশি পরিবারগুলোতে ক্রমবর্ধমান দাম্পত্য কলহের মূল কারণ। প্রতিদিন কমিউনিটির কোথাও না কোথাও দাস্পত্য কলহ থেকে সংঘাতের খবর পাওয়া যায়।

প্রবীণ কমিউনিটি নেতা কে এম আবু তাহের চৌধুরী বলেন, রোজার মাসে এরকম ঘটনা ভয়াবহ উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার। বর্তমানে নতুন আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ বিরাট সমস্যায় রূপ নিয়েছে। আমরা জানতে পারলে সামাজিকভাবে উদ্যোগ নিয়ে চেষ্টা করছি সমস্যাগুলো সমাধানের।