ফ্লোরিডায় নাইটক্লাবে হামলাকারী ওমর মতিনের স্ত্রী গ্রেফতার

73b1467a3604dd564583433a446d17aa-5760de869622eযুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ওরলান্ডোর একটি সমকামী নাইটক্লাবে গুলিবর্ষণ করে ৪৯ জনকে হত্যাকারী ওমর মতিনের স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই তাকে গ্রেফতার করেছে।  

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত নারীর নাম নুর সালমান। তাকে এফবিআই কাস্টডিতে নিয়েছে। তাকে সোমবার সান ফ্রান্সিসকোর নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। প্রসিকিউটররা তার বিরুদ্ধে, ওই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনতে যাচ্ছেন। তবে নুর সালমানের পরিচিত এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, সালমানের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দানের অভিযোগ আনা হয়েছে।

হামলার পর তদন্ত কর্মকর্তারা নুর সালমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। কিন্তু ওই সময় তিনি সত্য গোপন করেছিলেন। তদন্ত কর্মকর্তাদের ধারণা, ওমর মতিনের হামলা চালানোর বিষয়ে স্ত্রী সালমান জানতেন। মঙ্গলবার সান ফ্রান্সিসকোর আদালতে সালমানকে হাজির করা হতে পারে।

এর আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, আইন প্রয়োগকারী বাহিনী ও তদন্ত সংস্থাগুলোর জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় রয়েছেন মতিনের দ্বিতীয় স্ত্রী নুর সালমান। ২০১১ সালে তাদের বিয়ে হয়। এ দম্পতির তিন বছরের একটি সন্তানও রয়েছে। ফ্লোরিডার ফোর্ট পিয়েরসেতে থাকতেন মতিন ও সালমান। পালস ক্লাব থেকে মাত্র এক ঘণ্টার দূরত্বে ছিল তাদের বাড়ির অবস্থান। শনিবারের হামলার পর থেকেই সালমানকে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় রাখলেও তাকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি।
সূত্রের বরাত দিয়ে ফক্স নিউজ জানায়, হত্যাযজ্ঞ চালানোর সময় মতিন নাইটক্লাবের ভেতর থেকে স্ত্রীকে ফোন দিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অবশ্য সালমান পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তিনি স্বামীকে পালস ক্লাবে হামলা থেকে বিরত করার এবং সেখান থেকে বের করে আনার চেষ্টা করছিলেন। সালমানের দাবি, তার স্বামীর আচরণে পরিবর্তন দেখতে পেয়ে তাকে সহিংস কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছিলেন তিনি।

এফবিআইকে সালমান জানান, শনিবার নাইটক্লাবে হামলার কয়েক ঘণ্টা আগেই মিথ্যে কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান মতিন।

নুর সালমান

উল্লেখ্য, ১২ জুন ফ্লোরিডার ওই সমকামীদের নাইটক্লাবে চালানো ওই সন্ত্রাসী হামলায় ৪৯ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় ৪৯ জন নিহত হন। আহত হন আরও ৫৩ জন।  রাত ২টার দিকে  পালস নাইটক্লাবে ঢুকে গুলি চালান ওমর মতিন। এরপর তিনি নাইটক্লাবে অবস্থান করা লোকজনকে জিম্মি করেন। ওমর মতিনের কাছে একটি এআর-১৫ রাইফেল, একটি পিস্তল এবং দুটি সন্দেহজনক যন্ত্র ছিল। ভোর ৫টার দিকে সোয়াত-এর বিশেষ কমান্ডোরা জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য অভিযান চালান। ওই অভিযানে ওমর মতিন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জন্মগ্রহণ করা আফগান বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ওমর মতিন। ছোটবেলাতেই মা-বাবার সঙ্গে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ওরল্যান্ডোর ফোর্ট পিয়ার্স শহরে চলে আসেন। ওমর মতিনের শৈশব থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তার ব্যক্তি জীবন সম্পর্কে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের কাছ থেকে জানা যায়। ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তার জীবন সম্পর্কে প্রথম স্ত্রীর বয়ানে উঠে এসেছে। কিন্তু ২০১১ সালের পর থেকে তার জীবনের ঘটনাচক্র সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোনও ধারণা পাওয়া যায় না। ধারণা করা হচ্ছে, এ সময়েই হয়ত জঙ্গিবাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হন ওমর। সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস।

এ সম্পর্কিত আরও খবর:

/এএ/