৯/১১ হামলার সন্দেহভাজন নাটেরগুরু খালিদ শেখের বিচার শেষ হবে কবে?

খালিদ শেখ মোহাম্মদ, যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার সন্দেহভাজন নাটেরগুরু। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে পরিচালিত ওই হামলার ১৬তম বার্ষিকী পালিত হচ্ছে সোমবার। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যখন হামলার বার্ষিকী পালিত হচ্ছে তখন খালিদ গুয়ানতানামো বে-তে বসে ২৫তম বিচারপূর্ব শুনানির প্রস্তুতি নিচ্ছে।

2000

এই শুনানি আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সামরিক প্রসিকিউটরদের সর্বশেষ ধারণা হচ্ছে মোহাম্মদের সন্ত্রাসবাদের বিচারের জন্য জুরি নির্বাচন শুরু হবে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে। এই বিচারের বিষয়ের আগ্রহী বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ২০০৩ সালে পাকিস্তানে গ্রেফতার হওয়ার এই ব্যক্তির বিচার কি আদৌ শুরু হবে?

৫৩ বছরের আইনজীবী ডেভিড নেভিন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে বলেন, মামলাটি বিচারে যেতে অন্তত আরও দুই, তিন বা চার বছর সময় লাগবে। আর বিচারে লাগতে পারে আরও অন্তত এক বছর।

নেভিনের ধারণা, বিচার শেষে আপিলের রায়ের জন্য আরও অন্তত ৫ বছর অপেক্ষা করতে হবে। এরপর আপিল যাবে সার্কিট কোর্টে। যেখানে লাগবে আরও তিন থেকে চার বছর। সেখান থেকে সুপ্রিম কোর্ট চূড়ান্ত রায় দিতে লাগবে আরও চার বছর। সব মিলিয়ে এখন থেকে ১৮ বছর আর হামলার দিন থেকে ৩৪ বছর লাগবে খালিদের বিচার শেষ হতে।

নেভিন বলেন, ‘এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে খালিদের মৃত্যু হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। পুরো বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই কারাগারে আমার মক্কেলের মৃত্যু হতে পারে।’

যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারগুলোতে বন্দিদের প্রত্যাশিত গড় আয়ু নিয়ে আমার কাছে কোনও তথ্য নেই। কিন্তু যেসব বন্দিদের নির্যাতন করা হয় তাদের কথা বিবেচনায় রেখে বলতে পারি অন্যদের তুলনায় খালিদের আয়ু কম হবে। ফলে আমাদের প্রশ্ন করতে হবে, এরপরও কেন আমরা এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছি অথবা এই ভাবে করছি। আমরা প্রতি সপ্তাহে কয়েক লাখ ডলার ব্যয় করছি এমন কিছুর জন্য যার কোনও অর্থ হয় না।

দ্য হান্ট ফর কেএসএম বইয়ের সহযোগী লেখক টেরি ম্যাকডরমেট গত মাসে খালিদের ২৪তম বিচারপূর্ব শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, এখনই কেএসএমকে দেখে মনে হয় তার বয়স ৮৩ বছর, তাকে অনেক বৃদ্ধ মনে হয়। এখনও তার কালো ভ্রু রয়েছে এবং দাড়িতে মেহেদি লাগায়। কিন্তু তার মাথার চুল সাদা রয়েছে।

গত মাসের শুনানিতে হামলায় নিহত কয়েকজনের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। মামলাটি সামরিক ট্রাইব্যুনালে চলছে। শুনানির অবস্থায় জানা যাচ্ছে যে, বিচারপূর্ব শুনানির সিদ্ধান্তে আসা এখনও অনেক দূরে। বাদীর আইনজীবী দাবি করছেন, বিচারক ও প্রসিকিউটররা অযোগ্য। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে খালিদের মৃত্যুদণ্ড চাওয়া হচ্ছে। যা বাদীর আইনজীবীরা প্রত্যাখ্যান করে আসছেন।

নিউ ইয়র্কের ফোর্ডহ্যাম ইউনিভার্সিটি স্কুল অব ল এর সেন্টার অন ন্যাশনাল সিকিউরিটির পরিচালক কারেন গ্রিনবার্গ মনে করেন, খালিদের মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক আদালতে নিয়ে আসা উচিত। তিনি বলেন, বিচারের এই বিলম্ব লজ্জাজনক। এটি ধ্বংসাত্মক এবং মার্কিন বিচার ব্যবস্থায় কালো ছায়া ফেলছে। সূত্র: গার্ডিয়ান।