রোহিঙ্গা নিধন কয়েক দশকের মধ্যে বিশ্বের নিষ্ঠুরতম ঘটনা: ওয়াশিংটন পোস্ট

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়কে জাতিগত নিধনে ঘটনাটি গত কয়েক দশকের মধ্যে নিষ্ঠুরতম ঘটনা বলে আখ্যায়িত করেছে প্রভাবশালী মার্কিন দৈনিক পত্রিকা দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট। ১৬ সেপ্টেম্বর দৈনিকটির এক সম্পাদকীয়তে এই মন্তব্য করা হয়েছে।

847485626-2425

রাখাইনে মিয়নামারের সামরিক অভিযানে রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নিধনের প্রক্রিয়ার কথা তুলে ধরে ওয়াশিংটন পোস্টের সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, একবিংশ শতকের শুরুতে দারফুর, সুদান এবং ১৯৯০ দশকের দিকে কসোভোতে যে জাতিগত নিধন হয়েছে সে তুলনায় এই অপরাধের ঘটনায় আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ছিল অবাক করার মতো দুর্বল। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ন্যূনতম অবস্থান ব্যক্ত করে একটি বিবৃতি দিয়েছে। এতে ‘সামরিক অভিযানে অতিরিক্ত সহিংসতা’র ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিও ছিল কাছাকাছি।

সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়েছে, এই বিষয়ে বার্মা (মিয়ানমার) ডি ফ্যাক্টো বেসামরিক নেতা অং সান সু চি আলোচনায় রয়েছেন। যিনি এই নৃশংসতায় দুঃখজনকভাবে নীরব রয়েছেন এবং সেনাবাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করতে তার ক্ষমতার ঘাটতি রয়েছে। প্রয়োজন হলো বার্মার সেনাবাহিনীর ওপর সরাসরি চাপ সৃষ্টি করা। ওবামা প্রশাসন দেশটির জেনারেল ও বাণিজ্যের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তাদের সহযোগিতা করার কথা ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিত এই নিষেধাজ্ঞা পুনরায় বহাল করা।

কয়েকজন কর্মকর্তা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এই ধরনের কঠোর পদক্ষেপের সু চি ও বেসামরিক সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারে দেশটির সেনাবাহিনঅ। অবশ্য এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সচেতন মহল নোবেল জয়ীকে সহযোগিতা করতে পারে যদি তিনি তা কাজে লাগাতে চান।

ওয়াশিংটন পোস্টের সম্পাদনা পরিষদ লিখেছে, জাতিসংঘে মিয়ানমারকে রক্ষা করছে চীন। মিয়ানমারের এই নৃশংসতায় চীনের ওপর কোনও প্রভাব পড়ছে না। এমনকি পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার ক্ষেত্রে এমন নৃশংসতাকে স্বাগত জানাতেও দ্বিধা করছে না চীন। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত এই জাতিগত নিধন নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে প্রকাশ্য বিতর্কের পক্ষে অবস্থান নেওয়া। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলমান অপরাধের ঘটনা যতো বাড়বে বিশ্বের কাছে তা ততো স্পষ্ট হবে।