চেহারা শনাক্তকরণের প্রযুক্তি ব্যবহার করে আইনি জটিলতায় ফেসবুক

ছবিতে ব্যবহারকারীর সুস্পষ্ট অনুমোদন ব্যতিরেকে চেহারা শনাক্তের প্রযুক্তি ব্যবহারের অভিযোগের বিষয়ে ফেসবুকের বিরুদ্ধে জনস্বার্থে মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালত। রায় হওয়া মামলাটির আবেদনে বলা হয়েছিল,  ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অনুমতি না নিয়েই তাদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করেছে। ফেসবুক তাদের কাছে জমা রাখা ছবিতে ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে ব্যবহারকারীদের ‘ট্যাগ’ দেওয়ার সুযোগ দেয়। সহজে কারও সবগুলো ছবিতে ট্যাগ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে ফেসবুক ব্যক্তির মুখের বায়োমেট্রিক তথ্য ব্যবহার করে। ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়া এভাবে বায়মেট্রিক প্রোফাইল তৈরির কারণে ইলিনয় রাজ্যের আইনভঙ্গ হয়েছে। ২০১৮ সালে এসে রায় পাওয়া মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল ২০১৫ সালে।g

সোমবার বিচারক ডোনাটো তার রায়ে ফেসবুকের বিরুদ্ধে জনস্বার্থে মামলা দায়েরের জন্য করা আবেদন মঞ্জুর করেছেন। শেষ পর্যন্ত যদি জনস্বার্থে দায়ের করা মামলার রায় ফেসবুকের বিরুদ্ধে যায় তাহলে ওই মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ ফেসবুক ব্যবহারকারীরা সবাই ক্ষতিপূরণ পাবেন। আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত ফেসবুক ব্যবহারকারী বলতে ‘২০১১ সালের ৭ জুনের পর থেকে ইলিনয়ের যতজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর মুখ মৌলিকভাবে চিহ্নিত করার তথ্য ফেসবুক সংরক্ষণ করেছে তাদের সবাইকে’ বোঝাবে। রাশিয়া টুডে তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, ফেসবুক যে ইলিনয়ের বায়োমেট্রিক তথ্য সুরক্ষা আইন (বিআইপিএ) ভঙ্গ করেছে তার পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। ইলিনয়ের ওই আইন ২০০৮ সালে কার্যকর করা হয়েছিল। তাতে মুনাফার উদ্দেশ্যে ব্যক্তির বায়োমেট্রিক তথ্য ব্যবহার করা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছিল।

টেকক্রাঞ্চ লিখেছে, আদালতে শুনানির এক পর্যায়ে ফেসবুকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, আবেদনকারীদের ফেসবুকের ফেস রেকগনিশন প্রযুক্তি সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই। আদালত ওই বক্তব্যকে যথার্থ মনে করেনি। তাছাড়া বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করায় আবেদনকারীদের কোনও ক্ষতি হয়নি, ফেসবুকের এমন দাবি খারিজ করে দিয়েছে আদালত। আদালত মনে করে, প্রকৃত ক্ষতির ঘটনা যদি ঘটে গিয়েই থাকতো তাহলে ওই মামলা আর বিআইপিএ আইনে বিচার্য থাকত না। আবেদনকারীদের অভিযোগ ওই আইনে আমলে নেওয়ার যোগ্য, কারণ অভিযোগটি ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা ও সুরক্ষা ক্ষুণ্ণ হওয়ার বিষয়ে, শারীরিক বা আর্থিক ক্ষতির বিষয়ে নয়।

ব্লুমবার্গকে আবেদনকারীদের আইনজীবী শন উইলিয়ামস বলেছেন, যত বেশি ফেসবুকের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়ার বিষয়ে মানুষ সচেতন হবে এবং তথ্য সংগ্রহের পরিণতিতে যত বেশি আর্থিক বা নিয়ন্ত্রণকারীপক্ষের আইন নির্ধারিত হবে, তত বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে গভীরভাবে ভাববে এবং ব্যবহারকারীদের প্রত্যাশা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর শর্তের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ার চেষ্টা করবে।

রায়ের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ফেসবুক। তারা জানিয়েছে, ওই রায়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে তারা।