রমজানের পরেই ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা উন্মোচন

আগামী মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বহুল প্রত্যাশিত মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা উন্মোচন করার পরিকল্পনা করছে তার প্রশাসন। এই পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনিদের জন্য পশ্চিম তীর ও গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক ও উন্নয়ন সহযোগিতা কমিয়ে ফিলিস্তিনকে আরও বিচ্ছিন্ন করা হতে পারে। মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানিয়েছে, ট্রাম্পের জামাতা ও সিনিয়র উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার ও বিশেষ আন্তর্জাতিক মধ্যস্ততাকারী জ্যাসন গ্রিনব্লাট এই পরিকল্পনা সামনে আনবেন।

trumpmiddleeast

ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনায় কী আছে তা জানা যায়নি। তবে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, ট্রাম্পের পরিকল্পনায় চুক্তি হলে ইসরায়েল আরব বিশ্বের সঙ্গে ব্যবসা করাসহ উপসাগরীয় অঞ্চলে বিমান পরিচালনা করতে পারবে।

পাঁচজন মার্কিন কর্মকর্তা ও একজন কংগ্রেশনাল এইড জানান, ট্রাম্প প্রশাসন জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে শেষ দিকে, পবিত্র রমজান মাসের পরপরই শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করতে চায়। যদিও তারা বলছেন, ওই অঞ্চলের পরিস্থিতির কারণে সময় পেছানোও হতে পারে।কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কুশনার এবং গ্রিনব্লাট  এরই মধ্যে নীরবে প্রস্তাবটির ভিত্তিতে মিত্র ও অংশীদারদের বিষয়টি জানানো শুরু করেছেন । তবে ফিলিস্তিনিরা এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনায় অংশগ্রহণ বা মেনে নেওয়ার কথা জানায়নি।

ফিলিস্তিনিরা বলছেন, ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা একপাক্ষিকভাবে ইসরায়েলের স্বার্থে করা হয়েছে। এছাড়া ট্রাম্পের জেরুজালেম সিদ্ধান্তের পরই ফিলিস্তিনি নেতা জানান, যুক্তরাষ্ট্র শান্তি আলোচনার জন্য নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যস্ততায় কোনও আলোচনায় তারা অংশগ্রহণ করবেন না।

গত বছর ডিসেম্বরের  নিউ ইয়র্ক টাইমস প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্ভাব্য শান্তি পরিকল্পনা অনুযায়ী সৌদি আরব, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জর্ডানে যাত্রী পরিবহনসহ টেলিযোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে ইসরায়েল। চুক্তিতে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে ভূ-খণ্ড  বিনিময়ের কথা বলা হলেও কেন এবং কোন ভূ-খণ্ডের সঙ্গে কোন ভূ-খণ্ড বিনিময় করা হবে তা উল্লেখ করা হয়নি। আর প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে রাজি করাতে চুক্তির আওতায় সুন্নি আরব দেশগুলো ফিলিস্তিনকে কয়েকশ মিলিয়ন অর্থ সহায়তা দেবে। যাতে দেশটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে পারে। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর ৬ ডিসেম্বর ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী স্বীকৃতি দিয়ে সেখানে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের নির্দেশ দেন।

২০১৮ সালের ৬ মে জেরুজালেম পোস্ট জানায়, শান্তি পরিকল্পনার আওতায় দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমের চারটি এলাকার নিয়ন্ত্রণ ফিলিস্তিনিদের কাছে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেবেন ট্রাম্প।  ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আভিজদর লাইবারম্যানের ওয়াশিংটন সফরের সময়ে মার্কিন কর্মকর্তারা তাকে এই প্রস্তাব দিয়েছেন। ট্রাম্পের পরিকল্পনার আওতায় পূর্ব জেরুজালেমের জেবেল মুকাবার, ইসাউইয়া, সুয়াফাত ও আবু দিসের নিয়ন্ত্রণ ফিলিস্তিনিদের কাছে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হবে। এই অঞ্চলকেই ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী করবার প্রস্তাব থাকবে ওই চুক্তিতে। 

এর আগে ফিলিস্তিনও জানিয়েছিল, সম্ভাব্য শান্তি পরিকল্পনার আওতায় আবু দিসকে রাজধানী করবার প্রস্তাব দেওয়া হবে তাদের। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম নির্ভরযোগ্য সূত্রে এরইমধ্যে জানিয়েছে, সম্ভাব্য সেই শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে ফিলিস্তিনি নেতা মাহমুদ আব্বাসের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে চাপ প্রয়োগ করছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম মার্কিন মিত্র সৌদি আরব।