বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণে ছিল আইএসের ড্রোন শাখা

ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলায় ব্যবহার করা জন্য ড্রোন সরবরাহ করছিল বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিক। ড্রোন পরিবহন ও অর্থ স্থানান্তরের জন্য যুক্তরাজ্য, স্পেন ও বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছিল তারা। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডিল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, এদের একজনের নাম সাইফুল হক সুজন। অপর জন তার বড় ভাই আতাউল হক সবুজ। সুজন মারা যায় বিমান হামলায়। আর চার দেশে অন্তত চারটি জঙ্গি বিরোধী অভিযানের মাধ্যমে ধ্বংস করে দেওয়া হয় আইএসের ড্রোন বিভাগের কার্যক্রম। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, সাধারণ ড্রোনকে জঙ্গি হামলার কাজে ব্যবহার করার যে পথ আইএস দেখিয়ে গেছে তা অনুসরণ করতে পারে অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠন।Dh141VUVAAEHtk7

মার্কিন সামরিক একাডেমীর ‘কমব্যাটিং টেরোরিজম সেন্টার’ (সিটিসি) তাদের ১১ জুলাই প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইসলামিক স্টেটের সামরিক ও বেসামরিক উভয় কাজেই সুজন ও সবুজের সরবরাহ করা ড্রোন ব্যবহৃত হয়েছে। সাতটি ভিন্ন ভিন্ন দেশের ১৬ টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ড্রোনগুলো সংগ্রহ করেছিল তারা। ড্রোনের পাশাপাশি অন্য কাজে ব্যবহার করা যায় আবার হামলার কাজেও ব্যবহার করা যায়, এমন জিনিসপত্রও তারা ইসলামিক স্টেটের জন্য সরবরাহ করত।

‘দ্য ইসলামিক স্টেট অ্যান্ড ড্রোন্স: সাপ্লাই, স্কেল অ্যান্ড ফিউচার থ্রেটস’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এই দুই ভাইয়ের মধ্যে সুজন বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেটের শাখা ‘দাওয়াতুল ইসলাম বেঙ্গল’ গড়ে তোলায় কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেছে। জঙ্গি সাইফুল হক সুজন ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে বিমান হামলায় মারা যায়।

ইসলামিক স্টেটে যোগ দেওয়ার আগে সুজন ও তার বড় ভাই আতাউল হক সবুজ যুক্তরাজ্য, স্পেন ও বাংলাদেশে একাধিক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিল। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর আড়ালে তারা আইএসের হয়ে জঙ্গি তৎপরতা চালাত। তাদের বাংলাদেশি অফিসে কাজ করা পাঁচ জনকে ওই সময় বাংলাদেশে আটক করা হয়েছিল।

সাধারণ বাণিজ্যিক ড্রোনকে অস্ত্রে রূপান্তরিত করার বিষয়টির উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধক্ষেত্রে এসব ড্রোনের উপস্থিতি আধুনিক যুদ্ধ তৎপরতার ধরণই পাল্টে দিয়েছে। এমন তৎপরতাকে ছোট করে দেখাটা ঝুঁকি পূর্ণ হবে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, আইএসের দেখা দেখি অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোও একই পথ অনুসরণে আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডিল ইস্ট মনিটর লিখেছে, চার দেশে চালানো যে চার অভিযানে আইএসের ড্রোন বিভাগকে ধ্বংস করে দেওয়ার কথা লেখা হয়েছে প্রতিবেদনে তার চতুর্থটি ঘটেছিল যুক্তরাষ্ট্রে। ওই অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছিল মোহামেদ এলশিনওয়েকে। এই এলশিনওয়ে সুজন এবং সবুজের কাছ থেকে ৮ হাজার ডলার পেয়েছিল জঙ্গি হামলা চালানোর জন্য। এ বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে এলশিনওয়েকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।