প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আইনমন্ত্রী সেশনসের প্রতিবাদ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা সমালোচনার জবাবে বিবৃতি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন মার্কিন আইনমন্ত্রী জেফ সেশনস।  ট্রাম্প মন্তব্য করেছিলেন, জেফ সেশনস আইনমন্ত্রী হিসেবে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারছেন না। তিনি পল ম্যানাফোর্ট ও মাইকেল কোহেনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার বিষয়ে কিছু করতে পারেননি. আর ট্রাম্পকেও রুশ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ থেকে মুক্ত করতে ভূমিকা রাখেননি! সেশনসের হাতে আইন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নেই। ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের প্রতিবাদে বিবৃতি দিয়েছেন সেশনস। তিনি বলেছেন, শপথ নেওয়ার দিন থেকেই তিনি আইন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন। তবে কারও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাধনের জন্য তিনি মার্কিন আইন মন্ত্রণালয়কে ব্যবহৃত হতে দেবেন না! মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা লিখেছে, প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থিতার শুরুর দিক থেকেই ট্রাম্পের সমর্থক ছিলেন রিপাবলিকান সিনেটর জেফ সেশনস।মার্কিন আইনমন্ত্রী জেফ সেশনস

ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেছিলেন, পল ম্যানাফোর্ট ও মাইকেল কোহেনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও মামলার বিষয়ে হোয়াইট হাউজ যথাযথ ভুমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে। পল ম্যানাফোর্ট ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণা শিবিরের সাবেক চেয়ারম্যান। তার বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। আর মাইকেল কোহেন ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী ছিলেন। ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনের বিষয়ে চলা তদন্তের সূত্র ধরে মাইকেল কোহেনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

আল জাজিরা লিখেছে, মার্কিন আইন মন্ত্রণালয় ও ‘ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের’ (এফবিআই) বিরুদ্ধে অভিযোগের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প, যদিও তিনি তার অভিযোগের পক্ষে কোনও প্রমাণ উপস্থাপন করেননি। তিনি তারই নিয়োগ করা আইনমন্ত্রী সেশনসের ভূমিকাকে ‘আইন মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘আমি এমন একজনকে আইন মন্ত্রী বানিয়েছি যিনি কোনও দিন আইন মন্ত্রণালয়ের কর্তৃত্ব নিজের হাতে নিতে পারেননি।’

ট্রাম্পের এই বক্তব্যেই ক্ষেপেছেন সেশনস। তিনি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ‘যেদিন শপথ নিয়েছি সেদিন থেকেই আমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছি। আমি যতদিন আইন মন্ত্রীর দায়িত্বে আছি, ততদিন আইন মন্ত্রণালয়ের সিধান্তকে রাজনৈতিক বিবেচনার দ্বারা প্রভাবিত হতে দেবো না।’

ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থিতার বিষয়ে শুরুর দিককার একজন সমর্থক হলেও ট্রাম্প সেশনসের ওপর নাখোশ হন যখন মার্কিন নির্বাচনে বিষয়ে চলা তদন্তে থেকে তিনি নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন ‘বিব্রতবোধ করার’ কারণ দেখিয়ে। ট্রাম্পের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক ও ২০১৬ সালের নির্বাচনের বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া বিশেষ তদন্তকারী রবার্ট মুলারের  পরামর্শক হওয়ার কথা ছিল সেশনসের। কিন্তু তিনি তাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। স্বার্থের সংঘাত বা অন্য কোনও বিষয় যা কার্যক্রমকে পক্ষপাতদুষ্ট করতে পারে এমন বিষয়ের উপস্থিতি থাকলে সংশ্লিষ্ট পদাধিকারী ‘বিব্রতবোধের’ কারণ দেখিয়ে নিজেকে প্রত্যাহার করতে পারেন।

এ বিষয়েও ফক্সকে ট্রাম্প খোলাখুলি তার মনের কথা বলেছেন। ট্রাম্পের ভাষ্য, ‘রাশিয়া সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ থেকে মুক্ত করতেও সেশনস আমাকে সহায়তা করেননি। উল্টো তিনি নিজেই বিব্রতবোধ করে সরে দাঁড়িয়েছেন। এটা কোন ধরণের মানুষের কাজ!’