সৌদি আরবকে রক্ষার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প: সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ‘সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির’ (সিআইএ) সাবেক কর্মকর্তা ও বর্তমানে সংবাদমাধ্যম সিএনএনের নিরাপত্তাবিষয়ক বিশ্লেষক বব বেয়ার বলেছেন, ট্রাম্প মুখে যা-ই বলে থাকুন না কেন তিনি আসলে জামাল খাশোগির অন্তর্ধান ও সম্ভাব্য হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ থেকে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে রক্ষার চেষ্টা করছেন। যদি ট্রাম্প সত্যিই জামাল খাশোগির বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কোনও তথ্য জানতে ইচ্ছুক হতেন তাহলে এতদিনে এফবিআইয়ের তুরস্কে পৌঁছে যাওয়ার কথা।বব বেয়ার

জামাল খাশোগির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার ওভাল অফিসে দেওয়া বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন, ‘আমি তাদেরকে একেবারেই রক্ষার চেষ্টা করছি না। আমি নিজেও খুঁজে বের করতে চাই আসল ঘটনা, ত্রুটিটি আসলে কোথায়। আসা করি এ সপ্তাহের শেষ নাগাদ আমরা এ বিষয়ে জানতে পারব।’ কিন্তু বব বেয়ারের মতে, তিনি সেটাই করছেন তা করার কথা তিনি অস্বীকার করছেন। তার পক্ষে মোহাম্মদ বিন সালমানকে হারানোর ঝুঁকি নেওয়া সম্ভব নয়। সৌদি আরবকে ত্যাগ করার সাধ্য যুক্তরাষ্ট্রের নেই।’

যুবরাজের এমন অবস্থায় ট্রাম্প যে তাকে রক্ষার চেষ্টা করছেন তা প্রমাণে বেয়ার এফবিআইয়ের প্রসঙ্গ তুলেছেন। সাবেক এই সিআইএ কর্মকর্তা মনে করেন, ট্রাম্পের যদি সদিচ্ছা থাকত তাহলে এতদিনে তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেটে এফবিআই পৌঁছে যেত, এমনকি আনুষ্ঠানিকতার সূত্রে হলেও। যেহেতু তা হয়নি, এটা নিশ্চিত যে ট্রাম্প এ ঘটনার মূল রহস্য প্রকাশে বিশেষভাবে আগ্রহী নন। এখন পর্যন্ত কোনও আন্তর্জাতিক সংস্থাকেও এ বিষয়ে তদন্তের জন্য আহ্বান জানায়নি যুক্তরাষ্ট্র। সিএনএন লিখেছে, ওভাল অফিসে গতকাল কথা বলার সময় ট্রাম্পকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, এফবিআইকে পাঠানো হয়েছে কি না তা জানতে। ট্রাম্প এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

কেন ট্রাম্প যুবরাজকে রক্ষার চেষ্টা করছেন? বেয়ারের ভাষ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের পারস্পারিক নির্ভরশীলতা অত্যন্ত বেশি। এরকম অবস্থায় সৌদি রবকে রক্ষার চেষ্টাই করবে যুক্তরাষ্ট্র। তার ভাষ্য, ‘এটা একটি কুৎসিত সম্পর্ক, কিন্তু খুব সহসা এই সম্পর্ক ভেঙে পড়বে বলে মনে হয় না।’

গত ২ অক্টোবর দুপুরে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করেন খাশোগি। এরপর থেকে আর তাকে দেখা যায়নি। তুরস্কের তদন্তকারীরা বলছেন, সৌদি আরবের ১৫ জন এজেন্ট কনস্যুলেটের ভেতরেই খাশোগিকে হত্যা করেছে । তুর্কি আরব মিডিয়া এসোসিয়েশনের প্রধান তুরান কিসলাকসি একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দাবি করেছেন, খাশোগিকে হত্যা করে তার লাশ টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে। সৌদি আরব এই অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করে আসছে, কনস্যুলেটে প্রবেশের কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি বের হয়ে গেছেন।

খাশোগি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রবল সমালোচক ছিলেন। সৌদি আরবের এ রাজনৈতিক ভাষ্যকার মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্টে লেখা তার নিবন্ধে সৌদি জোটের কাতারবিরোধী অবরোধের কঠোর সমালোচনা করতেন। মানবাধিকার প্রসঙ্গে সমালোচনা করায় কানাডার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছিল সৌদি আরব। আর তখন সৌদির সমালোচনায় কলম ধরেছিলেন খাশোগি। সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ জানিয়েছে, তিনি মোহাম্মদ খালেদ খাশোগির দৌহিত্র। খালেদ খাশোগি দেশটির সাবেক বাদশাহ আব্দুল আজিজ আল সৌদের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছিলেন।

জামাল খাশোগি