গুলেনকে তুরস্কে ফেরত পাঠানোর কথা ভাবা হচ্ছে না: যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, জামাল খাশোগির হত্যার তদন্ত নিয়ে তুরস্ক যাতে সৌদি আরবকে বেশি চাপ না দেয় সেজন্য ফেতুল্লাহ গুলেনকে তুরস্কের ফেরত পাঠিয়ে এরদোয়ানের মন নরম করার কোনও চেষ্টা তারা করছে না। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) এ বিষয়ে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম এনবিসি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। তাদের ভাষ্য ছিল, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তইয়্যব এরদোয়ানকে খুশি করতে যুক্তরাষ্ট্র ফেতুল্লাহ গুলেনকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এ বিষয়ে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে আইন মন্ত্রণালয় ও এফবিআইকে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে।ফেতুল্লাহ গুলেন

জামাল খাশোগিকে গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তানবুলে অবস্থিত সৌদি দূতাবাসে হত্যা করে কেটে টুকরো টুকরো করা হয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ বলেছে, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশেই তার সমালোচক জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে। তুর্কি গোয়েন্দারা এ বিষয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। দেশটি অভিযুক্ত সৌদি কর্মকর্তাদের তালিকা প্রকাশ করে তাদেরকে ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সৌদি আরবের কাছে।

অপরদিকে ফেতুল্লাহ গুলেন তুরস্কের রাজনীতির প্রভাবশালী ব্যক্তি। দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের অভিযোগ, গুলেনের চক্রান্তেই ২০১৬ সালে তার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছিল, যা পরে ব্যর্থ হয়। সেই থেকে এরদোয়ান গুলেনের সমর্থক আখ্যা দিয়ে বহু ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। গুলেন ১৯৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসনে রয়েছেন। তুরস্ক বহুদিন ধরে তাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ মিত্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মনে করেন, ইরানের প্রভাব বৃদ্ধিকে রুখে দেওয়ার জন্য সৌদি আরবের ভূমিকা অপরিহার্য। তাছাড়া সৌদি আরবের কাছে শত শত কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করার বিষয়টিও তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের আইন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নিকোল নাভাস অক্সম্যান এনবিসির প্রতিবেদনের ভাষ্যকে অস্বীকার করে বলেছেন, খাশোগির হত্যার তদন্ত ও ফেতুল্লাহ গুলেনকে তুরস্কের হাতে তুলে দেওয়া, এই দুই বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত কোনও আলোচনার বিষয়ে তারা অবগত নন।

রয়টার্স লিখেছে, আইন মন্ত্রণালয়ের জন্য এমন বিবৃতি বিরল। কারণ তারা খুব সহসা কাউকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বিবৃতি দেয় না। হোয়াইট হাউজের একজন কর্মকর্তাও এনবিসির প্রতিবেদনের বিষয়ে একই রকম বক্তব্য দিয়েছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে।