জরিপ প্রভাবিত করতে ট্রাম্পের নির্দেশে অর্থ দিয়েছিলাম: কোহেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেন বলেছেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে রিপাবলিকান প্রার্থীদের মধ্যে সেরা বাছাইয়ের জন্য আহুত জরিপের ফলাফল প্রভাবিত করতে তিনি একটি প্রতিষ্ঠানকে অর্থ দিয়েছিলেন। এ সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের এবং শুধুধুমাত্র তার লাভেরই জন্য। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ২০১৪ সালে সেরা ব্যবসায়ীর জরিপেও ট্রাম্প নিজের পক্ষে বেশি ভোট পেতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভুয়া ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে অর্থ দিতে বলেছিলেন।s3.reutersmedia.net

মাইকেল কোহেন ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের আইনজীবী। রাশিয়াতে ট্রাম্প টাওয়ার নির্মাণের বিষয়ে কংগ্রসের কাছে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া ও ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণার সুবিধার্থে একজন নারীকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে গত মাসে তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্পকে নির্বাচন পূর্ববর্তী এক জরিপে রিপাবলিকান প্রার্থীদের মধ্যে এগিয়ে রাখতে রেডফিঞ্চ নামের প্রতিষ্ঠানকে অর্থ দিয়েছিলেন কোহেন। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান গগার বলেছেন, একটি ব্যাগে মুড়িয়ে তাকে অর্থ দেওয়া হয়েছিল।

এ বিষয়ে কোহেনের ভাষ্য, ‘যা আমি করেছি, তা সম্পূর্ণভাবে ট্রাম্পের দিকনির্দেশনায় করেছি এবং সম্পূর্ণভাবে তার স্বার্থের জন্য করেছি। এমন অন্ধ আনুগত্যের কারণে এখন আমার অনুতাপ হয়, যে আনুগত্যের যোগ্য ট্রাম্প নন।’ রয়টার্স জানিয়েছে, অর্থ খরচ করে প্রভাবিত করার চেষ্টা করলেও ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে হওয়া ওই জরিপে সুবিধা করে উঠতে পারেননি ট্রাম্প। জরিপে তিনি পান পাঁচ শতাংশ ভোট পান। কিন্তু লক্ষ্য করার মতো বিষয়, ট্রাম্প তার নির্বাচনি প্রচারণায় সময় বারংবার বিভিন্ন জরিপের ফলাফলের প্রসঙ্গ আনতেন। জরিপে তিনি কেমন সমর্থন পেয়েছেন সে তথ্য তুলে ধরে ভোটারদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা থাকত তার।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্রে রয়টার্স জানিয়েছে, রেড ফিঞ্চের জন গগারকে কোহেন এমন একটি কমপিউটার স্ক্রিপ্ট লিখতে বলেছিলেন যাতে করে সেটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দেয় জরিপে ফল প্রভাবিত করতে। গগারের সঙ্গে কোহেনের সম্পর্কের শুরু ইনস্টাগ্রাম দিয়ে। গগার কোহেনের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট সেট করে দিয়েছিলেন!

তারপর গগারকে বিশেষ আরেকটি কাজ করতে দিয়েছিলেন কোহেন। সেটা হচ্ছে তাকে যৌন আবেদনময়ী পুরুষ হিসেবে ইন্টারনেটে প্রচারণা চালানোর। এ জন্য গগার টুইটারে ‘ওমেন ফর কোহেন’ নামের অ্যাকাউন্টও খুলেছিলেন! ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে যে জরিপের ফলাফল প্রভাবিত করতে কোহেন গগারকে অর্থ দিয়েছিলেন সেই জরিপে ট্রাম্পে পান মাত্র পাঁচ শতাংশ ভোট; ২৪ হাজার।

কোহেন ২০১৪ সালে গগারকে ট্রাম্পের বিষয়ে আরেকটি কাজ দিয়েছিলেন। মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সিএনবিসির একটা অনলাইন জরিপ ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের সেরা ১০০ ব্যবসায়ী নেতা বাছাই করার। সেখানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রথম একশ জনের ভেতরেই রাখা হয়নি ট্রাম্পকে। ট্রাম্প সিএনবিসির জরিপের ফলাফল নিয়ে লিখেছিলেন, ‘এই অভিযোগ হাস্যকর।’ তাকে ‘রাজনৈতিক’ কারণে তালিকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।