যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা জালিয়াতি ধরতে ‘ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের’ ফাঁদ, ১২৯ ভারতীয় শিক্ষার্থী গ্রেফতার

যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস) পরিচালিত ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ১২৯ ভারতীয় শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মিশিগানের ডেট্রয়েট থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিবাসন জালিয়াতি বন্ধের জন্য মার্কিন গোয়েন্দারা আন্ডার কাভার অভিযানের অংশ হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয় চালু করেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আরও শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হতে পারে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এখবরজ জানিয়েছে।

 ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট। বৃহস্পতিবার তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে

গ্রেফতারকৃত ভারতীয় শিক্ষার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। অভিবাসন আদালতে মামলার নিষ্পপ্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) কাস্টডিতে থাকতে হবে।

বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রসিকিউটর  ভারতীয় বংশোদ্ভুত আট ব্যক্তিকে গ্রেফতারের ঘোষণা দেন। ইউনিভার্সিটি অব ফার্মিংটন নামের ওই ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পে টু স্টে’ স্কিমের আওতায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের স্টুডেন্ট ভিসা ও কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছিলো।

মার্কিন কর্তৃপক্ষের দাবি, অবৈধ স্টুডেন্ট ভিসা চক্রকে চিহ্নিত করতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির তদন্তের অংশ হিসেবে এই ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয় চালু করা হয়েছিল। এখন তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কর্মকর্তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অন্তত ৬০০ শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছেন।

আইসিই’র মুখপাত্র কারিসা কাট্রেল এক ই-মেইল বার্তায় বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত আইসিই ১৩০ জন বিদেশি নাগরিককে ইউনিভার্সিটি অব ফার্মিংটনে ভর্তি হয়ে অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের দায়ে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে ১২৯ জনই ভারতীয় নাগরিক।

ওয়াশিংটনে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস এই বিষয়ে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীদের কাছে যাওয়ার কনস্যুলার সুবিধা চেয়েছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের পক্ষে যা করা সম্ভব তারা তা করছেন।

শিক্ষার্থীদের পক্ষের আইনজীবীরা দাবি করছেন, বিশ্ববিদ্যালয় বৈধ জেনেই শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়েছে। অনেকে অন্যত্র অধ্যয়ন করছিলেন। কিন্তু তারা অ্যাক্রিডিটেশন হারিয়ে ফেলায় এখানে ভর্তি হন। কেউ কেউ দ্বিতীয় মাস্টার্স করার জন্য ভর্তি হন। যাতে করে বি-১বি প্রোগ্রামের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা পেতে পারেন।

নিউ ইয়র্ক টাইমসকে অভিবাসন আইনজীবী রাবি মান্নাম বলেন, বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর জন্য যে পদ্ধতি সরকার অবলম্বন করছে তা প্রশ্নবিদ্ধ ও সমস্যাজনক।

মার্কিন প্রসিকিউটরদের দাবি, শিক্ষার্থীরা জেনেশুনেই ভর্তি হয়েছে। বৃহস্পতিবার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা জানতো যে এটা সরকার অনুমোদিত নয়। তাদের লক্ষ্য ছিল ভুয়া হলেও স্টুডেন্ট ভিসা টিকিয়ে রেখে কাজের সুযোগ পাওয়া।