অনির্ধারিত সফরে আফগানিস্তানে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যাট্রিক শানাহান অনির্ধারিত এক সফরে আফগানিস্তান পৌঁছেছেন। সেখানে তার আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সঙ্গে বৈঠক করার কথা। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আফগান তালেবানের সঙ্গে শান্তিচুক্তির যে প্রক্রিয়া চলছে মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধি জালমাই খালিলজাদের সঙ্গে তা দ্রুততর করতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবেন শানাহান।2d851ff357324f4a9ad1b059a20d2a72_18
নাইন ইলেভেনের হামলার পর ২০০১ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের নির্দেশে আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর অভিযান শুরু হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানে তালেবানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ শেষ হয় ২০১৪ সালে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনীসহ ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সেনাবাহিনী এখনও আফগান সেনা সদস্যদের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। তবে একই সঙ্গে চলছে শান্তি আলোচনা। আফগান তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আলোচনায় সব শর্তের বিষয়ে একমত না হওয়া পর্যন্ত কোনও অস্ত্রবিরতি কার্যকর করা হবে না।
আফগান তালেবানের হাত থেকে নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নিতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনীর। এখনও আফগানিস্তানের অর্ধেক এলাকার নিয়ন্ত্রণ তালেবান যোদ্ধাদের হাতে। গত শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) শারি পুল প্রদেশের এক পুলিশ চৌকিতে আফগান তালেবানের হামলায় প্রাণ গেছে আট পুলিশ সদস্যের। গত শুক্রবারও একটি সেনা চৌকিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে প্রাণ গেছে তিন সেনা সদস্যের। আহত হয়েছে চার জন।
ভারপ্রাপ্ত মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যাট্রিক শানাহানসোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) আফগানিস্তান সফরের সময় শানাহান কথা বলেছেন সাংবাদিকদের একটি ছোট্ট দলের সঙ্গে। তার ভাষ্য, আফগানিস্তান বিষয়ক আলোচনায় আফগান সরকারের উপস্থিতি দরকার। ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত স্বার্থ রয়েছে সেখানে, যার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চান তিনি। একই সঙ্গে যুদ্ধরত সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলারও ইচ্ছে রয়েছে শানাহানের।
আফগান তালেবান শান্তিচুক্তির জন্য সরাসরি দেশটির সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে ইচ্ছুক ছিল না। প্রথমে রাজি না হলেও পরে যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য বিশেষ মার্কিন প্রতিনিধি জালমাই খালিলজাদকে পাঠাতে হয়। একদিকে তাদের পাস কাটিয়ে শান্তি আলোচনা হওয়া ও অপর দিকে দেশটিতে মোতায়েন থাকা মার্কিন সেনা সদস্যদের প্রত্যাহারের ঘোষণায় শঙ্কিত কাবুল। তাদের ধারণা, ভবিষ্যতে আবারও দেশটি সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আল জাজিরার কাবুল প্রতিনিধি মন্তব্য করেছেন, শানাহানের আকস্মিক এই সফর আসলে একটি ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন।’ জিম ম্যাটিসের পদত্যাগের পর প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া শানাহান শান্তিচুক্তির বিষয়ে কী ভাবেন তা সংশ্লিষ্টদের কাছে খুব একটা স্পষ্ট নয়। এই সফরে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবেন তিনি। তাছাড়া, মার্কিন নেতৃত্বাধীন শান্তি আলোচনায় জায়গা না পাওয়া আফগান সরকারের জন্যও তার মন্তব্য গুরুত্বপূর্ণ।