যুক্তরাষ্ট্রে করোনা সংশ্লিষ্ট অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত অন্তত ৮৫ শিশু

যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত সাতটি অঙ্গরাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া বেশ কয়েকজন শিশুর বিরল ও সম্ভাব্য বিপজ্জনক লক্ষণ দেখা দিয়েছে। দেশটির চিকিৎসকরা বলছেন, এই বিরল রোগে আক্রান্তের সংখ্যা খুব বেশি না। করোনা নিয়ে সচেতনতা জোরদার হওয়ার ফলে এমনটি হতে পারে। তবে এই সপ্তাহে শিশুদের এই অবস্থার আনুষ্ঠানিক নামকরণ করা হয়েছে। আর তা হচ্ছে পেডিয়াট্রিক মাল্টিসিস্টেম ইনফ্ল্যামেটরি সিনড্রোম। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানা গেছে।

200408-coronavirus-paramedic-baby-connecticut-se-451p_7e025133661280b8bac6498e20b4f621.fit-2000w

এনবিসি’র প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৮৫ শিশুর এই বিরল লক্ষণ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই অন্তত ৬৪ জন নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের। এখানে দেশটিতে সবচেয়ে বেশি করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বোস্টন শিশু হাসপাতালে চার, ফিলাডেলপিয়ার শিশু হাসপাতালে পাঁচ থেকে দশ, লস অ্যাঞ্জেলসের হাসপাতালে তিন, ডেলাওয়ারের নেমর্স শিশু স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় তিন, লুইজিয়ানার ওকসনার মেডিক্যাল সেন্টারে তিন এবং সিয়াটলের শিশু হাসপাতালে একজন রয়েছেন।

ওয়াশিংটন ডিসি’র শিশুদের জাতীয় হাসপাতালেও দুই শিশু রয়েছে। তবে এই হাসপাতালের আইসিইউতে আরও ১৫ শিশু রয়েছে তাদের কোভিড-১৯ এর কারণে বড় ধরনের প্রদাহ জটিলতা তৈরি হয়েছে। অবশ্য এটি স্পষ্ট নয় যে, এই সব রোগীদের পেডিয়াট্রিক মাল্টিসিস্টেম ইনফ্ল্যামেটরি সিনড্রোম রয়েছে কিনা।

হাসপাতালটির ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিনের চিকিৎসক মাইকেল বেল বলেন, এই সব শিশুর বিভিন্ন ধরনের গুরুতর প্রদাহ রয়েছে। আমার মনে হয় এটি ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে নতুন রোগের লক্ষণ হতে পারে। কারণ আমরা এর সংক্রমণ ও প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে প্রতিদিনই নতুন তথ্য পাচ্ছি।

খবরে বলা হয়েছে, নতুন চিহ্নিত এই লক্ষণ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার শিশুদের প্রতিষেধক ব্যবস্থা হয়ত দুর্বল হয়ে গেছে। তবে এখনও সবশিশুর ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসকে দায়ী করা যাচ্ছে না। কারণ অনেকের পরীক্ষার ফল করোন নেগেটিভ এসেছে।

ফিলাডেলপিয়া শিশু হাসপাতালে শিশু সংক্রাম ব্যাধির প্রধান ডা. অড্রি জন বলেন, আমরা এখনও কোভিড-১৯ এর সঙ্গে এর সম্পর্কের বিষয় নিশ্চিত হতে চাইছি। এমনটি হতেও পারে। এক্ষেত্রে শিশুদের বেশি জ্বর, ভয়াবহ ডায়রিয়া, র‍্যাশ ও চোখ লাল হওয়া বা পানি পড়ার মতো লক্ষণ থাকছে। তবে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো এতে তাদের হৃদপিণ্ডে জটিলতা দেখা দিচ্ছে।

জন আরও বলেন, যতদূর হওয়ার কথা ততদূর তাদের হৃদপিণ্ড প্রসারিত হচ্ছে না। ফলে তাদের রক্তের চাপ ঠিক রাখার জন্য ওষুধ দিতে হচ্ছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, এই শিশু রোগীদের আগামী কয়েক বছর হৃদরোগের জটিলতার জন্য ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে।