মঙ্গলে চলাচল শুরু করেছে নাসার পারসিভেয়ারেন্স

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার পারসিভেয়ারেন্স রোভার মঙ্গল গ্রহে চলাচল শুরু করেছে। তবে যাত্রায় এটি খুব বেশি দূর চলাচল করেনি। সব মিলিয়ে মোট ২১ ফুট চলাচল করেছে। তবুও এটিকে তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত বলে অভিহিত করেছেন সংস্থাটির উপ-প্রকল্প বিজ্ঞানী ক্যাটি স্ট্যাক মরগান। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।

ক্যাটি স্ট্যাক মরগান বলেন, রোভারটির এখনও অনেক প্রকৌশলগত যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। কিন্তু যখন রোভারটি চলাচল শুরু করেছে তখন সেটিকে মঙ্গল পৃষ্ঠে অনুসন্ধানকারী হিসেবে আমরা বিবেচনা করতে পারি।

লাল গ্রহ বলে পরিচিত মঙ্গলে দুই সপ্তাহ আগে অবতরণ করে ১ টনের রোবট। প্রকৌশলীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় অতিবাহিত করেছেন রোভারটির যন্ত্রাংশ ও রোবটিক হাতকে সক্রিয় ও কার্যকর করে তোলার জন্য।

সবাই অপেক্ষায় ছিলেন পারসিভেয়ারেন্স নড়াচড়ার জন্য। বৃহস্পতিবার সেই মুহূর্ত আসে। ওই দিন এটি সামনে কয়েক পা আগায়। এরপর ১৫০ ডিগ্রি কোনে ঘুরে এবং পরে কিছুটা পেছনে যায়।

পারসিভেয়ারেন্স রোভারের মবিলিটি প্রকৌশলী আনাইস জারিফিয়ান বলেন, আপনারা দেখতে পারেন মঙ্গলে চাকার যে দাগ আমরা রেখে আসছি। মঙ্গলে চাকার দাগ পড়তে দেখে যে খুশি হয়েছি এমন মুহূর্ত আমার জীবনে আর আসেনি। আমাদের টিমের জন্য এটি বড় মাইলফলক। আমরা পৃথিবীতে চালিয়েছি কিন্তু মঙ্গলে চালানো ছিল চূড়ান্ত লক্ষ্য। এই মুহূর্তের আমাদের অনেক মানুষ কাজ করেছে।

রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষার পর নাসার মহাকাশযান পারসিভেয়ারেন্স-এর রোবট সফলভাবে মঙ্গল গ্রহের বুকে নামার পর সেখান থেকে ছবি পাঠাতে শুরু করেছে। এটি যেখানে অবতরণ করেছে সেটি হলো গ্রহটির বিষুব অঞ্চল, যার নাম জেযেরো। ধারণা করা হয়, জেযেরোয় কয়েকশ' কোটি বছর আগে বিশাল একটি হ্রদ ছিল। সেই হ্রদে ছিল প্রচুর পানি এবং খুব সম্ভবত সেখানে প্রাণের অস্তিত্বও ছিল।

ছয় চাকার এই রোবটযান আগামী দুই বছর মঙ্গল গ্রহ থেকে নমুনা সংগ্রহের কাজ করবে। প্রাচীন হ্রদ এলাকার মাটিপাথরের মধ্যে খনন চালিয়ে এটি অতীত অণুজীবের অস্তিত্ব সন্ধানের কাজ করবে।

পারসিভেয়ারেন্সের রোবটযানটি প্রথম যে দুইটি ছবি পৃথিবীতে পাঠিয়েছে, সেগুলো তোলা হয়েছে দুর্বল শক্তির প্রকৌশলী ক্যামেরা দিয়ে। ক্যামেরার লেন্সে ধুলার আস্তরণের মধ্যে দিয়ে পারসিভেয়ারেন্সর রোভার অর্থাৎ ওই রোবটযানের সামনে ও পেছনে সমতল ক্ষেত্র দেখা যাচ্ছে।

নাসার বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, রোবটযানটি জেযেরোর ব-দ্বীপের মতো চেহারার একটি অংশের দুই কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবতরণ করেছে। এই এলাকাতেই পারসিভেয়ারেন্স তার অনুসন্ধান কাজ চালাবে।