জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা ব্যবহার স্থগিত করলো যুক্তরাষ্ট্র

জনসন অ্যান্ড জনসনের উদ্ভাবিত এক ডোজের করোনাভাইরাসের টিকার ব্যবহার স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। টিকাটি গ্রহণের পর রক্ত জমাট বাধার ঘটনা সামনে আসার পর এই আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ)। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বলছে আগাম সতর্কতা হিসেবে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

এফডিএ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত জনসন অ্যান্ড জনসনের ৬৮ লাখ ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ছয় জনের রক্ত জমাট বাধার ঘটনা শনাক্ত হয়েছে। এর আগে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনেও রক্ত জমাট বাধার খবর পাওয়া যায়। আর সেই খবরের পরও টিকাটির ব্যবহার সীমিত হয়ে পড়ে।

মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফডিএ’র একাধিক টুইট বার্তায় জানানো হয়েছে, দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) এবং তারা মিলে মোট ছয়টি ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছে। এসব ঘটনায় টিকাটি গ্রহণের পর বিরল এবং মারাত্মক ধরনের রক্ত জমাট বেধে যেতে দেখা গেছে। এই মুহূর্তে এসব বিরুপ প্রতিক্রিয়া চরম বিরল বলে দেখা যাচ্ছে। টুইট বার্তায় বলা হয়েছে, ‘আগাম সতর্কতা হিসেবে আমাদের সুপারিশ হলো টিকাটি ব্যবহার স্থগিত রাখা হোক।’

এফডিএ এবং সিডিসির এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রক্ত জমাট বাধার এই ঘটনাটি হলো চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় সেরেব্রাল ভেনাস সাইনাস থ্রমবোসিস বা সিভিএসটি। মস্তিষ্ক থেকে পরিবহনের নালীতে রক্ত জমাট বাধার ঘটনা বোঝাতে এই টার্মটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই ধরনের রক্ত জমাট বাধার চিকিৎসার জন্য প্রচলিত ব্যবস্থার চেয়ে আলাদা ধরনের চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। রক্ত জমাট বাধার চিকিৎসায় হেপারিন নামে পরিচিত একটি ওষুধ ব্যবহার হলেও এই ধরনের বিরল ক্ষেত্রে ওই ওষুধের ব্যবহারের পরিণতি মারাত্মক হতে পারে জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে।

এফডিএ জানিয়েছে, যে ছয়টি ঘটনা শনাক্ত করা হয়েছে তারা সবাই নারী। বয়স ১৮ থেকে ৪৮ বছরের মধ্যে। টিকা গ্রহণের ছয় থেকে ১৩ দিন পর তাদের রক্ত জমাট বাধার লক্ষণ দেখা দিয়েছে।

এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, এক নারীর মৃত্যু হয়েছে আর দ্বিতীয় আরেক নারীর অবস্থা গুরুতর।

এফডিএ এবং সিডিসির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা গ্রহণের পর যাদের তিন সপ্তাহের মধ্যে তীব্র মাথা ও পেট ব্যাথা, পা ব্যাথা কিংবা শ্বাসপ্রশ্বাসের পরিমাণ কমে গেছে তাদের দ্রুত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।’