বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা, আসতে পারে কোভিড-২৬ ও কোভিড-৩২

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ভবিষ্যতের মহামারি এড়াতে শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বাধীন চীনা সরকারের উচিত করোনাভাইরাসের উৎস অনুসন্ধানে বিশ্বকে সহযোগিতা করা। কোভিড-১৯ সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ জানাশোনা না থাকলে আগামীতে কোভিড-২৬ ও কোভিড-৩২ আসতে পারে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এখবর জানিয়েছে।

টেক্সাস চিলড্রেন’স হসপিটাল সেন্টার ফর ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্টের সহ-পরিচালক পিটার হোটেজ বলেন, করোনার উৎস সম্পর্কে সঠিক তথ্য না জানলে ভবিষ্যতে মহামারির ঝুঁকিতে থাকবে বিশ্ব। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি’র মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর উৎস সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে না জানতে পারলে আগামী কোভিড-২৬ ও কোভিড-৩২ আসতে পারে।

মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)-এর সাবেক কমিশনার স্কট গটলিয়েব দাবি করেছেন, চীনের ল্যাব থেকে সার্স-কভ-২ এর ছড়িয়ে পড়ার দাবি জোরদার হচ্ছে। তিনি বলেন, এটিকে ভুল প্রমাণ করতে চীন খুব বেশি প্রমাণ হাজির করেনি। কিন্তু বণ্যপ্রাণী থেকে ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার অনুসন্ধানে কোনও ফলাফল আসেনি।

হোটেজ আরও বলেছেন, চীনে দীর্ঘমেয়াদী অনুসন্ধান চালানো এবং মানুষ ও পশুর রক্তের নমুনা সংগ্রহে বিজ্ঞানীদের অনুমতি দেওয়া উচিত।

যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তদন্তের জন্য চীনের ওপর চাপ প্রয়োগ করা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের প্রয়োজন বিজ্ঞানী, এপিডেমিওলজিস্ট, ভাইরোলজিস্ট ও ব্যাট ইকোলজিস্টদের একটি দলের হুবেই প্রদেশে ছয় মাস, বছরব্যাপী অবস্থান করা করা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা করোনার উৎস অনুসন্ধানের জন্য ৯০ দিন সময় বেঁধে দেওয়ার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছেন, মহামারির উৎস অনুসন্ধানকে রাজনীতি দ্বারা বিষিয়ে তোলা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, উহানের একটি ল্যাব থেকে কোভিড-১৯ মহামারির সূত্রপাত হয়েছে। তবে ডব্লিউএইচও বলছে, ভাইরাসের উৎস জানা যায়নি কিন্তু ল্যাব থেকে লিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

করোনাভাইরাসে উৎস নিয়ে নতুন করে বিতর্কের সূত্রপাত হয় ২৩ মে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চীনের উহান ইন্সটিটিউট অব ভাইরোলজির তিন গবেষক করোনায় আক্রান্ত হওয়ার মতো উপসর্গ ও মৌসুমী রোগে আক্রান্ত ২০১৯ সালের নভেম্বরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সরকারিভাবে করোনায় প্রথম আক্রান্ত হওয়ার তারিখের আগেই এই গবেষকরা অসুস্থ হয়েছিলেন।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এই প্রতিবেদনটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ফ্যাক্টশিটের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এতে বলা হয়েছিল, মার্কিন সরকারের বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে যে, প্রথম করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার আগে ২০১৯ সালের শরতে উহান ইন্সটিটিউট অব ভাইরোলজির কয়েকজন গবেষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার মতো উপসর্গ ও সাধারণ মৌসুমী অসুস্থতা ছিল।

অবশ্য প্রতিবেদনটিতে আক্রান্ত গবেষকদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি।