নগরায়ণ, বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে তীব্র গরমে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঢাকা: গবেষণা

দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে সৃষ্ট তীব্র গরমে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকা। সোমবার প্রকাশিত এক নতুন গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

গবেষণাটি সম্পন্ন করেছেন নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটা টুইন সিটিজ, ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনা ও ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা।

গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, এই দুটি কারণে স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ছে এবং বিশ্বের দরিদ্রদের জন্য শহরে বসবাস কম সুবিধাজনক করে তুলছে।

১৯৮৩ সালে ঢাকার জনসংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ হলেও এখন তা বেড়ে ২ কোটি ২০ লাখের কাছাকাছি।

গবেষণায় ১৩ হাজার শহরের ১৯৮৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রতিদিনের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা পর্যালোচনা করেছেন বিজ্ঞানীরা। তথাকথিত ‘ওয়েট-বাল্ব গ্লোব টেম্পারেচার’ স্কেল ব্যবহার করে তারা তীব্র গরম হিসেবে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে নির্ধারণ করেছেন। পরে গবেষকরা এই তথ্য শহরগুলোর জনসংখ্যার পরিসংখ্যানের সঙ্গে আবহাওয়ার তথ্যের তুলনা করেছেন।

তারা নির্দিষ্ট বছরের তীব্র গরমের দিনগুলো বের করেছেন ওই বছরে শহরের জনসংখ্যা দিয়ে। যেটিকে তারা পারসন-ডেজ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। এই হিসেবে ১৯৮৩ সালে শহরগুলোর পারসন-ডেজ ছিল প্রতি বছর ৪ হাজার যা ২০১৬ সালে বেড়ে হয়েছে ১১ হাজার ৯০০ কোটি।

গবেষণা দলের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির আর্থ ইন্সটিটিউটের কাসকেড তুহোলস্কে জানান, এর ফলে রোগ ও মৃত্যুর হার বাড়ছে। এটি মানুষের কর্মক্ষমতাকে প্রভাবিত করছে। পরিণতিতে কম অর্থনৈতিক ফলাফল অর্জিত হচ্ছে। আগে থেকে থাকা স্বাস্থ্য জটিলতাকেও বাড়াচ্ছে এই পরিবর্তন।

এমন প্রবণতা আরও যেসব শহরে দেখা গেছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, সাংহাই, গুয়াংঝু, ইয়াঙ্গুন, দুবাই, হ্যানয়, খার্তুম এবং পাকিস্তান, ভারত ও আরব উপদ্বীপের অনেক শহর।

যেসব বড় শহরে তাপমাত্রা বৃদ্ধির অর্ধেক কারণ উষ্ণ জলবায়ু সেগুলোর মধ্যে রয়েছে বাগদাদ, কায়রো, কুয়েত সিটি, লাগোস, কলকাতা ও মুম্বাই।

যুক্তরাষ্ট্রের ৪০টি বড় শহরে দ্রুত তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রবণতা গবেষণায় উঠে এসেছে। টেক্সাস, লুইজিয়ানা, মিসিসিপি, আলাবামা ও ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের শহর রয়েছে এই তালিকায়।