নিউ ইয়র্কে ওমিক্রন: রোগী বেশি, কর্মী কম

ব্রুকলিনের একটি আন্তঃধর্মীয় মেডিক্যাল সেন্টারের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট একেবারে পরিপূর্ণ, বেশিরভাগ করোনা রোগী। এই দৃশ্য ২০২০ সালের বসন্তের পরিস্থিতির মতোই, যখন হাসপাতালের বারান্দায় বেডে ছিলেন রোগীরা।

কিন্তু বুধবার যখন সেন্টারটির পক্ষ থেকে শহরের কর্মকর্তাদের অ্যাম্বুলেন্সকে অন্য হাসপাতালে পাঠানোর জন্য বলা হয় তখন তা মাত্র দুই ঘণ্টার জন্য মেনে চলা হয়। হাসপাতালটির শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, প্রতিবেশী হাসপাতালগুলোর জরুরি কক্ষতেও রোগীর ভীড় বেশি কিংবা গুরুতর কর্মী সংকট রয়েছে।

আন্তঃধর্মীয় হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ল্যারে ব্রাউন বলেন, শুধু সেফটি নেট হাসপাতাল নয়, ব্রুকলিনের সবগুলোতেই চাপ।

নিউ ইয়র্কে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে অনেক হাসপাতাল দুটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যা আধিক্য এবং নার্স, চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ানের ক্রমবর্ধমান সংকট। অনেক কর্মী করোনায় অসুস্থ, মহামারিতে চাকরি ছেড়ে দেওয়া কর্মীদেরও বিকল্প নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

স্বাস্থ্য সেবা কর্মকর্তারা বলছেন, আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর চেয়ে ওমিক্রন মৃদু বলে মনে হচ্ছে। ভেন্টিলেটরে খুব বেশি রোগী রাখতে হচ্ছে না। এমনকি বড় হাসপাতালগুলোতে ইনটেনসিভ কেয়ারের বেড ফাঁকা পড়ে আছে স্বাস্থ্যকর্মী নেই বলে।

নিউ ইয়র্ক সিটির বৃহত্তম স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নর্থওয়েল হেলথের জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা জন ডি’অ্যাঞ্জেলো বলেন, আমার মনে রাজ্যের সবাই ভুগছেন। কারণ কর্মী সংকটের কারণে নর্থওয়েলকেও বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে পাঠানো রোগীদের ভর্তি করা সীমিত করতে হয়েছে।

ডি’অ্যাঞ্জেলো জানান, নর্থওয়েলের প্রায় ৪ হাজার কর্মীর (৫ শতাংশ) বৃহস্পতিবার করোনা পজিটিভ ফল এসেছে। যা প্রথম ঢেউয়ের চূড়ার চেয়েও দ্বিগুণ বেশি। প্রয়োজন অনুসারে হাসপাতালগুলোর মধ্যে কর্মী বিনিময় করা যায়। কিন্তু জরুরি কক্ষগুলোতে স্বাভাবিক সক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণ কাজ করতে হচ্ছে এবং অপেক্ষার সময়ও বেড়েছে।

ছোট কমিউনিটির স্বল্প সামর্থ্যের হাসপাতালগুলোর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। আন্তঃধর্মীয় এবং ব্রুকডেল ও তাদের সহযোগী নার্সিং হোমগুলোতে করোনায় ৪৭১ থেকে ৭ হাজার কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে অনেক নার্সকে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ রোগীর সেবা করতে হচ্ছে।

গ্রেটার নিউ ইয়র্ক হসপিটাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কেনেথ ই. রাসকে বলেন, হাসপাতালগুলোর জন্য এটি চ্যালেঞ্জের। কিন্তু আমাদের সেফটি নেট প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্দিষ্টভাবে চাপের। অনেক হাসপাতাল সহযোগিতা চেয়েছে। এসব সহযোগিতার মধ্যে রাজ্যের পক্ষ থেকে কর্মী সহায়তা। কিন্তু সমস্যা হলো কর্মী নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যেও প্রায় একই অবস্থা বিরাজ করছে। নিজ জার্সির কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছে হাসপাতালগুলোর কর্মী সংকট মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল টিম মোতায়েন করার জন্য।  সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস