গর্ভপাতের অধিকার বাতিল করলো মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট

যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক লাখ নারী বৈধ গর্ভপাতের অধিকার হারাতে যাচ্ছেন। দেশটির সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার ৫০ বছর পুরনো ঐতিহাসিক এক রায় খারিজ করার পর এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ‘রয় বনাম ওয়েড’ মামলার রায়ের ফলে দেশটিতে গর্ভপাত বৈধতা পেয়েছিল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।

এই রায়ের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাতের অধিকারে আমূল পরিবর্তন আসবে। এখন থেকে অঙ্গরাজ্যগুলো নিজেরা গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া চালু করতে পারবে। দেশটির অন্তত অর্ধেক অঙ্গরাজ্যে গর্ভপাত ইস্যুতে নতুন বিধিনিষেধ বা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে।

১৩টি অঙ্গরাজ্যে ইতোমধ্যে তথাকথিত আইন পাস হয়েছে। যযার ফলে সুপ্রিম কোর্টের রুলিংয়ের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে গর্ভপাত বেআইনি হিসেবে পরিগণিত হবে। কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে নতুন বিধিনিষেধ শিগগিরিই জারি হতে পারে।

ডবস বনাম জ্যাকসন ওমেন’স হেলথ ওর্গানাইজেশনের একটি মামলা বিবেচনায় নিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এই মামলায় মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যে ১৫ সপ্তাহ পর গর্ভপাত নিষিদ্ধের আইনকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। কিন্তু রক্ষণশীল সংখ্যাগরিষ্ঠ আদালত রাজ্যের পক্ষে রায় দেয়। এতে করে কার্যত গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার খর্বিত হলো।

রায়ে বলা হয়েছে, সংবিধান গর্ভপাতের অধিকার দেয়নি। গর্ভপাত নিয়ন্ত্রণের অধিকার জনগণ এবং তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ফেরত দেওয়া উচিত।

১৯৭৩ সালের রয় বনাম ওয়েড মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, কোনও নারীর গর্ভপাতের অধিকার মার্কিন সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত। এই রায়ের ফলে মার্কিন নারীরা গর্ভধারনের প্রথম তিন মাসের মধ্যে গর্ভপাতের অধিকার পেয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ট্রিমেস্টারে বিধিনিষেধ ও তৃতীয় ট্রিমেস্টারে এই বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল।

কিন্তু পরের দশকগুলোতে গর্ভপাতবিরোধী মনোভাব এক ডজনের বেশি অঙ্গরাজ্যে বৃদ্ধি পায়। শুক্রবারের রায়টি সুপ্রিম কোর্টের নিজের দেওয়ার রায় বিরোধী। যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বিরল। এতে করে রাজনৈতিক লড়াই শুরু হতে পারে যা দেশকে বিভক্ত করতে পারে।