মহাকাশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ রঙিন ছবি প্রকাশ করলো নাসা

মহাবিশ্বের এমন ছবি আগে কখনই ধরা পড়েনি। মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা’র আলোচিত জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ থেকে পাওয়া প্রথম পূর্ণাঙ্গ রঙিন ছবি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউজে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপে প্রথম তোলা ছবিগুলোর একটি প্রকাশ করেন। জেমস ওয়েবে তোলা আরও কয়েকটি ছবি মঙ্গলবার (১২ জুলাই) প্রকাশ করবে নাসা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।

১০ বিলিয়ন ডলারের নাসার ফ্ল্যাগশিপ মিশনখ্যাত জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপটি হাবল টেলিস্কোপের উত্তরসূরি। গত বছর ২৫ ডিসেম্বর এটি মহাকাশে পাঠানো হয়। প্রথম প্রকাশ পাওয়া জেমস ওয়েবের তোলা ঐতিহাসিক ছবিটির বিশেষত্ব হলো—এটি ৪৬০ কোটি বছর আগের সুদূর মহাবিশ্বের ছায়াপথগুচ্ছের ছবি। এটি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের প্রথম ‘ফুল-কালার ডিপ ফিল্ড ইমেজ’, এবং সেইসঙ্গে মানবজাতির ইতিহাসে দূর মহাবিশ্বের ‘ডিপেস্ট’ (গভীরতম) ও ‘শার্পেস্ট’ (সুস্পষ্ট) ইনফ্রারেড ছবি। 

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলে আসছেন, মহাশূন্যে ফুঁড়ে ব্রহ্মাণ্ড তৈরির রহস্য বের করে আনবে নাসার দূরবীন জেমস ওয়েব। হাবল টেলিস্কোপের থেকেও এর দূরদৃষ্টি বেশি। হাবল টেলিস্কোপ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে, জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ একধাপ এগিয়ে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করবে। 

মহাকাশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ রঙিন ছবি

জেমস ওয়েবে তোলা ছবিটির ছায়াপথগুচ্ছ থেকে আলো এসে পৌঁছাতে ৪৬০ কোটি বছর লেগেছে। এত দূরের বস্তু ঝাপসা বা দেখার অযোগ্য থাকার কথা, কিন্তু এখানেই জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের বিশেষত্ব। জেমস ওয়েবের ছবিতে দেখা যাওয়া ছায়াপথগুচ্ছের মোট ভর এত বেশি যে, সেটি মহাকর্ষিক লেন্স হিসেবে কাজ করছে। আর সেই লেন্স দিয়ে পেছনের আরও দূরের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আলোকবিন্দু বড় হয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। সেসব আলোকবিন্দুও একেকটি অদেখা ছায়াপথ, সেখানেও রয়েছে অগণিত গ্রহ-উপগ্রহ।

হোয়াইট হাউজে সংবাদ ব্রিফিংয়ে ছবিটি প্রদর্শন করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এসময় তিনি বলেন, এই ছবিগুলো বিশ্বকে মনে করিয়ে দেবে যে, আমেরিকা বড় কিছু করতে পারে। এটি মার্কিন জনগণ, বিশেষ করে আমাদের শিশুদের মনে করিয়ে দেবে আমাদের সামর্থ্যের বাইরে কিছু নেই। আমরা সেই সম্ভাবনা দেখতে পারি যা অন্যরা কখনও দেখেনি। আমরা এমন জায়গায় যেতে পারি যেখানে আগে কেউ যায়নি।