কংগ্রেস অবমাননায় দোষী সাব্যস্ত ট্রাম্পের সহযোগী

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুরনো কৌশলবিদ স্টিভ ব্যাননকে কংগ্রেস অবমাননার দুইটি ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এক বিচারক। ক্যাপিটল দাঙ্গার ঘটনা তদন্তকারী কংগ্রেসীয় কমিটিকে অসহযোগিতা করায় গত বছর অভিযুক্ত হয়েছিলেন ৬৮ বছরের ব্যানন।

হোয়াইট হাউজের সাবেক প্রধান কৌশলবিদ ব্যানন বলে আসছেন, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি দাঙ্গার সময়ে তিনি ছিলেন ট্রাম্পের বেসরকারি উপদেষ্টা। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় এখন তিনি দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং দুই লাখ ডলার পর্যন্ত জরিমানার মুখে পড়তে পারেন।

আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় ব্যানন আপিলে এই মামলা উল্টে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার আইনজীবীরা বলছেন তারা ‘বুলেট-প্রুফ আপিল’ করবেন। ব্যানন বলেন, আজ এখানে লড়াইয়ে হয়তো আমরা হেরে গেলাম, কিন্তু এই যুদ্ধে আমরা হারবো না’। আগামী ২১ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে দণ্ড ঘোষণার তারিখ নির্ধারিত হয়েছে।

মার্কিন বিচার বিভাগের আইনজীবীরা যুক্তি দিয়েছেন ব্যানন নিজেকে ‘আইনের ঊর্ধ্বে’ ভেবে কংগ্রেসীয় কমিটির ‘বাধ্যতামূলক’ আইনি সমন উপেক্ষা করেছিলেন। ওই কমিটি ৬ জানুয়ারি মার্কিন ক্যাপিটলে দাঙ্গার ঘটনায় আইনি লঙ্ঘন তদন্ত করছিল।

প্রসিকিউটর মোলি গ্যাসটন তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের সরকার কেবল তখনই কাজ করে যখন মানুষ দেখে, এটি কেবল তখনই কাজ করে যখন মানুষ নিয়ম মেনে খেলে, এবং এটি তখনই কাজ করে যখন মানুষ দায়বদ্ধ হয়। আসামি আইন মেনে চলার বদলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আনুগত্য বেছে নিয়েছিলেন’।

শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে ‘মধ্যযুগে’ যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও, ব্যাননের আইনজীবী দল বৃহস্পতিবার তার সাক্ষ্য গ্রহণ করেননি। এছাড়া অন্য কোনও সাক্ষীকে ডাকা ছাড়াই মামলাটিকে এগিয়ে নেয়। আইনজীবীদের যুক্তি ব্যাননের বিরুদ্ধে বিচার হচ্ছে রাজনৈতিক শত্রুতামূলক কারণে। তাদের দাবি সমন উপেক্ষা করার চেয়ে তিনি বরং তাদের সঙ্গে দরকষাকষিতে বিশ্বাস রেখেছিলেন। এছাড়া তিনি সমনের সময়সীমা নমনীয়, চূড়ান্ত কিছু নয় বলেও ভেবেছিলেন বলে জানান তার আইনজীবীরা।

২০১৬ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনে জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা ছিল স্টিভ ব্যাননের। প্রথমে ব্যানন তার প্রচারণা প্রধান এবং পরে হোয়াইট হাউজের প্রধান কৌশলবিদের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ভার্জিনিয়ার শার্লটসিভিলেতে সহিংস উগ্র ডান-পন্থীদের মিছিলের জেরে রাজনৈতিক পতনের পর ২০১৭ সালের আগস্টে পদ ছেড়ে যান ব্যানন। তবে অনেকে এখনও তাকে ট্রাম্পের শীর্ষ সহযোগীদের একজন বিবেচনা করেন।

সূত্র: বিবিসি