যুক্তরাষ্ট্রে চার মুসলিম হত্যায় সন্দেহভাজন আটক

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের আলবুকার্ক শহরে চার মুসলিমকে হত্যার ঘটনায় ‘প্রাথমিক সন্দেহভাজন’ হিসেবে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার স্থানীয় পুলিশ প্রধান হ্যারল্ড মেদিনা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আটককৃত ওই সন্দেহভাজনের নাম মুহাম্মদ সাঈদ। পেশায় গাড়িচালক ৫১ বছরের ওই ব্যক্তিকে গত সোমবার আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে আলবুকার্ক শহরে নিহত চার মুসলিমের মধ্যে দুই জনকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। অন্য দুইটি হত্যার ক্ষেত্রেও তাকে অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

নিহত চার জনের মধ্যে প্রথম জন গত নভেম্বরে খুন হন। তারপর গত দুই সপ্তাহে আরও তিনজনকে হত্যা করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, তারা ওই ব্যক্তির গাড়ি ট্র্যাক করে তাকে আটক করেছে। আফগান বংশোদ্ভূত ওই ব্যক্তির বাসা থেকে থেকে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

নিউ মেক্সিকোর যে শহরে এই চারটি হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সেখানে পাঁচ লাখ ৬৫ হাজার মানুষের বসবাস। তার মধ্যে পাঁচ হাজার মুসলিম। তারা গত কয়েক মাস ধরে রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছে।

নিহতদের মধ্যে একজন ২৭ বছরের মোহাম্মদ আফজাল হোসেন ছিলেন শহরের প্ল্যানিং ডিরেক্টর। তার ভাই ইমতিয়াজ হুসাইন বলেছেন, প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পর শহরের মুসলিমরা আশ্বস্ত হবেন।

ইমতিয়াজ বলেন, তার বাচ্চারা জানতে চেয়েছে তারা এখন বারান্দায় যেতে পারবে কি না। মাঠে গিয়ে খেলতে পারবে কি না! তবে তিনি জানিয়েছেন, তিনি ও তার পরিবারের অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তারা এসব প্রশ্নের জবাব চান।

৬১ বছরের মোহাম্মদ আহমেদি এবং ৪১ বছরের আফতাব হাসানকেও হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া ২৫ বছরের নঈম হুসাইনকেও হত্যা করা হয়েছে। গত ৮ জুলাই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন। গত শুক্রবার তাকে হত্যা করা হয়। তিনি অন্য দুই জনের শেষকৃত্যে অংশ নিয়েছিলেন।

তিনজনই সেখানকার সবচেয়ে বড় মসজিদ ইসলামিক সেন্টার অব নিউ মেক্সিকোতে নামাজ আাদায়ের জন্য গিয়েছিলেন।

মসজিদের সঙ্গে যুক্ত আনিলা আবাদ জানিয়েছেন, ওই অঞ্চলের প্রচুর মুসলিম ভয়ে মসজিদে আসা বন্ধ করে দিয়েছিল। খুব দরকার না হলে তারা বাইরে বের হচ্ছিল না। পাকিস্তান থেকে আসা কিছু ছাত্র শহর ছেড়েই চলে গেছে। তার ভাষায়, ‘আমরা আতঙ্কিত। এখনও বোঝার চেষ্টা করছি, কেন এমন হলো?’

আলবুকার্কের মেয়র টিম কেলার একটি বিবৃতিতে বলেছেন, দ্রুত পদক্ষেপ সাম্প্রতিক ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়া মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ বৃদ্ধি করবে।

টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘আলবুকার্কের চার জন মুসলিম পুরুষের ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে আমি ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। এ ঘটনার পূর্ণ তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা নিহতদের পরিবার এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের পাশে আছি। এমন ঘৃণ্য হামলার কোনও স্থান যুক্তরাষ্ট্রে নেই।’