যুক্তরাষ্ট্রে নিখোঁজ বাংলাদেশি নার্সের সন্ধান দাবি

গত বছর ডিসেম্বরে নিখোঁজ হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের বেডফোর্ড পার্ক এলাকায় বসবাসকারী বাংলাদেশি নার্স মাহফুজা রহমানের সন্ধানের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটি। গত বছর ৮ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে চারটার পর থেকে মাহফুজা রহমানের কোনও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। গত দুই সপ্তাহে মাহফুজা রহমানের সন্ধানে স্থানীয় পুলিশের অভিযান জোরদার হয়েছে।

মাহফুজা রহমানের (ইনসেটে) সন্ধানের দাবি বাংলাদেশি কমিউনিটির

পুলিশ জানায়, মাহফুজা নিখোঁজ হওয়ার এক সপ্তাহ পর তার স্বামী মোহাম্মদ চৌধুরী ও ৯ বছরের মেয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। স্থানীয় বাংলাদেশিরা মাহফুজার স্বামীকে পুলিশের সামনে উপস্থিত হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

সম্প্রতি বাংলাদেশি কমিউনিটি মাহফুজার সন্ধানের দাবিতে একটি মিছিল করে।  মিছিলটি মাহফুজার পরিত্যক্ত বাসার সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় কমিউনিটির আইনজীবী মোহাম্মদ এন. মজুমদার। বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাহফুজার খোঁজ করার জন্য বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষ হিসেবে আমাদের সামাজিক দায়িত্ব রয়েছে। কারও যদি কিছু ঘটে তাহলে আমাদের সবার প্রতিবাদ করা উচিত।

স্থানীয় বোর্ড-৭ কমিউনিটির সভাপতি অ্যাডালিন ওয়াকার সান্টিয়াগো বলেন, আমরা চাই সবাই পোস্টার হাতে ছবি তুলে তা সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করুন। মাহফুজা খুব আকর্ষণীয় ছিলেন। মাত্র ৩০ বছরের একনারী। যার ৯ বছরের এক মেয়ে রয়েছে। আমরা জানি না তার কী ঘটেছে।

মাহফুজা রহমান ম্যানহাটনের বেলেবু হাসপাতালে নার্সের কাজ করতেন। ৮ ডিসেম্বর কাজে যোগদান না করায় বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। এর এক সপ্তাহ পর কর্তৃপক্ষ তার বাসায় লোক পাঠায় খোঁজ করার জন্য। বাসায় গেলে স্বামী তাদের জানান, বাংলাদেশে মাহফুজার বাবা-মা দুর্ঘটনায় পড়েছেন। ফলে মাহফুজা দেশে চলে গেছেন। হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীদের তিনি জানান, মার্চে মাহফুজা ফিরে আসবেন। মার্চে মাহফুজা কাজে যোগ না দেওয়ায় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি স্থানীয় পুলিশকে জানায়। পুলিশ বাসায় গিয়ে ঘর তালাবদ্ধ দেখে। পরে তালাভেঙে প্রবেশ করে পুলিশ ঘর খালি দেখতে পায়।

মাহফুজার প্রতিবেশী জন গার্সিয়া জানান, সর্বশেষ ১৫ ডিসেম্বর মাহফুজার স্বামীকে আমি দেখি। তখন তিনি বলেছিলেন দেশে যাচ্ছেন, তার বাসা দেখে রাখার জন্য।

কিন্তু মাহফুজার স্বামী যে দুর্ঘটনার গল্প সাজিয়েছেন তা প্রতারণা হতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। মাহফুজার অভিভাবকরা পুলিশকে জানান, মাহফুজার স্বামী ও মেয়ে তার খোঁজে সরাসরি বাংলাদেশ চলে যান। এরপর পুলিশের কোনও ফোন রিসিভ করছেন না তিনি। পুলিশ তাকে নিখোঁজের সঙ্গে জড়িত হিসেবে সন্দেহ করছে না। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খুঁজছে।

নিউ ইয়র্ক ডেইলি নিউজের এক খবরে দাবি করা হয়েছে, মাহফুজা ডিসেম্বরে বিমানের টিকিট বুক করেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন ২ ফেব্রুয়ারি তিনি ফিরবেন। পরে টিকিটের তারিখ পরিবর্তন করে ২ মে করা হয়। এ থেকে পুলিশের ধারণা মাহফুজা দেশটিতে নেই। তবে পুলিশের কাছে মাহফুজার স্বামীর বাংলাদেশের ঠিকানা নেই। সূত্র: নরউড নিউজ।

/এএ/