মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচির পরিদর্শন মেনে নেয়নি। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করতেও সম্মত হয়নি। শুক্রবার (৪ জুলাই) হোয়াইট হাউজে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন শেষে এয়ার ফোর্স ওয়ানে নিউজার্সি যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও ইরান এটি অন্য কোনও স্থানে আবার শুরু করতে পারে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বলব এটা স্থায়ীভাবে পিছিয়ে গেছে। আমার মনে হয়, ওদের অন্য কোনও স্থানে আবার শুরু করতে হবে। আর যদি ওরা শুরু করে, তাহলে সেটা হবে এক বড় সমস্যা।’
তিনি আরও বলেন, তেহরানকে আবার পারমাণবিক কর্মসূচি শুরু করতে দেয়া হবে না এবং ইরান তার সঙ্গে বৈঠক করতে চায়।
জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা (আইএইএ) শুক্রবার জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোয় পরিদর্শন নিয়ে উত্তেজনা বাড়ায় সংস্থাটি তাদের শেষ পরিদর্শক দলটিকেও ইরান থেকে প্রত্যাহার করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বলছে, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির উদ্দেশ্যে। তবে তেহরান বলছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে।
তিন সপ্তাহ আগে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েল প্রথমবারের মতো ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সামরিক হামলা চালায়। ওই সময় থেকে আইএইএ’র পরিদর্শকরা ইরানের কোনও স্থাপনায় প্রবেশ করতে পারেননি। যদিও সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন, পরিদর্শন ফের শুরু করাই তার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
এদিকে ইরানের পার্লামেন্ট একটি আইন পাস করেছে, যেখানে বলা হয়েছে যতক্ষণ না তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে, ততক্ষণ আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত থাকবে। যদিও আইএইএ বলেছে, ইরান এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে সহযোগিতা স্থগিতের কথা জানায়নি। তবে কবে নাগাদ তাদের পরিদর্শকরা ইরানে ফিরতে পারবে তা অনিশ্চিত।
ইরান অভিযোগ করেছে, আইএইএ কার্যত ৩১ মে প্রকাশিত একটি কড়া প্রতিবেদন এবং এর জের ধরে ৩৫-জাতির গভর্নর বোর্ডের প্রস্তাবের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে বোমা হামলার পথ তৈরি করে দিয়েছে। ওই প্রস্তাবে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির লঙ্ঘনকারী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সামরিক হামলায় ইরানের তিনটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাগুলো ধ্বংস অথবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ইরানের মোট ৯ টন সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের কী হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ — অস্ত্র তৈরির স্তরের এক ধাপ নিচে।