সম্প্রতি জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের অবস্থা খুবই খরাপ। নারী অবজারভেশন রুমে মাত্র একজন রোগীকে বেডে রেখে রক্ত দেওয়া হচ্ছে। বেডগুলোর মাত্র একটিতে একজন রোগী বিশ্রাম নিচ্ছেন। বাকি বেডগুলো ফাঁকা। দেখা যায়, যেসব রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে এসেছেন তারা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে শুপারিশ করা রোগীরা এসেছেন। তাদের বেশিরভাগের অক্ষরজ্ঞান খুবই কম। হাসপাতালে কিভাবে টিকিট কাটতে হয়, কোথায় যেতে হয় এর কিছুই বোঝেন না। তারা জরুরি বিভাগ কি জিনিস সেটাও ঠিকমতো জানেন না।
নীলফামারী থেকে মা আয়েশা বেগমকে (৬৬) নিয়ে এসেছেন ছেলে আজমল হোসেন (৩২)। আজমল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এখানকার চিকিৎসা ভালো। তবে পদে পদে টাকা দিতে হয়। রোগীদের সঙ্গে হাসপাতালের লোকেরা অনেক খারাপ ব্যবহার করেন। ট্রলি নেওয়া থেকে শুরু করে সবখানেই বাড়তি টাকা দেওয়া লাগে। এখান থেকে চলে যাচ্ছি। এর থেকে বাড়ি থাকাই ভাল।’
মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান (৪০) ক্যান্সার আক্রান্ত মা সুফিয়া খাতুনকে (৫৬) চিকিৎসা ফলোআপে এনেছেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এখানকার সিস্টেম খুবই খারাপ। এখানে জরুরি বিভাগের অবস্থা বেশি খারাপ। সবখানে ঘুষ আর দুর্নীতি ছাড়া কোনও কাজ হয় না। একটা রোগী ভর্তির জন্য দিনের পর দিন ঘুরতে হয়। মাকে টানা তিন দিন চেষ্টা করেও ভর্তি করতে না পেরে হাসপাতালের লোক ধরে ভর্তি করেছি।’
ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের জন্য হাসপাতালটি হলেও এটির অবস্থা মোটেই ভাল নয়। এখানে পুরো হাসপাতাল জুড়ে অপরিচ্ছন্নতার ছাপ। ২০০৯ সালের ১১ আগস্ট ৫২০ শয্যা বিশিষ্ট এনআইসিআরএইচ মহাখালীতে যাত্রা শুরু করে। ৯টি ওয়ার্ড ও ৩০টি কেবিনে রোগীদের সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
ওই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘এখান থেকে অন্য হাসপাতালে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়ার হার খুব বেশি। দেখা যায় ,জরুরি বিভাগে ঢোকার আগেই দালাল রোগীকে বলতে শুরু করেন, এখানকার চিকিৎসা ভালো না। এখানকার চিকিৎসকরাই বেসরকারি হাসপাতালে অনেক অর্থের বিনিময়ে রোগীর ভালো চিকিৎসা করান। রোগীরা বোঝেন না, অন্য জায়গায় যান এবং শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা নিতে ব্যর্থ হন।’
আহসান হাবিব মুকুল আরও বলেন, ‘একটি সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যা যা থাকা দরকার তার সবই আমাদের এখানে আছে। আমরা আমাদের রোগীর সব রকম চিকিৎসা দিতে পারছি।’