বাজারে নেই রোটা ভাইরাসের ভ্যাকসিন রোটারিক্স

 

রোটারিক্সবসুন্ধরা আবাসিকের বাসিন্দা তনুশ্রী হালদার। তিনমাস বয়সী সন্তানকে রোটা ভাইরাসের টিকা রোটারিক্স দেওয়ার জন্য নগরীর বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরছেন। কিন্তু টিকা পাননি। শুধু তনুশ্রী নয়, তার মতো অনেকেই এই টিকা খুঁজছেন, কিন্তু পাচ্ছেন না।  চিকিৎসকরা বলছেন, এখন এই টিকার সংকট চলছে। 
তনুশ্রী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, টিকা দেওয়ার জন্য তিনি প্রথমে সন্তান নিয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালে যান। সেখানে ভ্যাকসিন নেই শুনে ইউনাইটেড হাসপাতালে যান। সেখানেও ভ্যাকসিন নেই বলে জানায়। এরপর মীরপুরের টিকাদান কেন্দ্র রাড্ডায় যেতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পর জানতে পারেন এই ভ্যাকসিনের সরবরাহ নেই। কবে নাগাদ আসবে তারা জানাতে পারেনি। 
লাজ ফার্মার পান্থপথ শাখার বিক্রয় সহযোগী মান্নান বলেন, রোটা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নেই। শিগগিরই আসার সম্ভাবনাও নেই। চিকিৎসকদের পরামর্শে বিকল্প কিছু থাকলে সেটি দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। 
ল্যাবএইডের করপোরেট কমিউনিকেশন্স বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার সাইফুর রহমান লেনিন বলেন, ‘রোটা ভাইরাসের জন্য রোটারিক্স ভ্যাকসিনটি শিশুদের দেওয়া হতো। এটি সাপ্লাই দিত গ্ল্যাক্সো স্মিথ ক্লাইন (জিএসকে)। এই কোম্পানি বাংলাদেশে কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। এর কোনও অলটারনেটিভ ভ্যাকসিন বের হয়নি। হেলথকেয়ারের একটি ভ্যাকসিন বের করার কথা আছে কিন্তু এখনও বের হয়নি। যার কারণে আমাদের কাছে এখন রোটা ভাইরাসের কোনবো ভ্যাকসিন নেই। এই ভ্যাকসিনটা দেওয়া পুরোপুরি বন্ধ আছে।’
জাতীয় ক্যানসার  হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রওশন জাহান রুনু বলেন, ‘এখন শুধু রোটা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নয় সবধরনের ভ্যাকসিন এর বাজারে সংকট চলছে। এটা কেন করা হচ্ছে বুঝতে পারছি না। এতে তো রোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
ঢাকা শিশু হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা. তাহমিনা ফেরদৌস বলেন, ‘রোটা ভাইরাসের টিকা শিশুকে দুই থেকে ছয় মাসের মধ্যে দু’বার দিতে হয়। এই টিকাটা না দিলে শিশুর ডায়রিয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।’
বাজারে সরবরাহের বিষয়ে ভ্যাকসিন সংশ্লিষ্ট ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের এক কর্মকর্তাকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘রোটা ভাইরাসের ইনফেকশন হলে ডায়রিয়া হয়। এটার হলে রোটারিক্স দিতে হয়।  এই ভ্যাকসিন শিশুদের ইমিউনিটি সিস্টেম ডেভেলপ করে। এটা খুব ছোট অবস্থায় দু’টি দিতে হয়। এটা ওরাল (মুখে খাওয়ার) ভ্যাকসিন।’ 
তিনি বলেন, ‘জিএসকের প্রডাক্ট জনগণের কাছে পরিচিত ছিল। তাদের প্রডাক্টের নামটা সবাই জানে তাই এটাই খোঁজে। এখন এই ভ্যাকসিনের ক্রাইসিস চলছে। অন্য কোম্পানির এই ভ্যাকসিন ভিন্ন নামেও বাজারে আছে। এই প্রোডাক্টগুলো সব লেভেলের চিকিৎসক ব্যবহার করে না। এটার বাজার খুব একটা বড় না।  জিএসকে হয়তো ভ্যাকসিনটি বাজারে রাখবে। বাংলাদেশে সরবরাহের জন্য তারা আমদানিকারকও নিতে পারে।  সানোফিরও বোধহয় একটা প্রোডাক্ট ছিল।’