ঢামেক হাসপাতালে প্রথম শিশু করোনা ইউনিট

1ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের জন্য পৃথক ইউনিট চালু করা হয়েছে। গত ১০ মে এ ইউনিট চালু হওয়ার মাধ্যমে  দেশে প্রথম পৃথক শিশু করোনা ইউনিট স্থাপিত হয়েছে বলে বাংলা ট্রিবিউনকে জানান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সাঈদা আনোয়ার।
অধ্যাপক সাঈদা আনোয়ার জানান, এ ইউনিটে বর্তমানে নয়টি শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে। চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন অনেকেই। মারা গেছে তিনটি শিশু। তবে যে শিশুগুলো মারা গিয়েছে তাদের তীব্র শ্বাসকষ্ট ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেষ সময়ে এসেছে, সব ম্যানেজমেন্ট করার পরও তাদের বাঁচানো যায়নি।
গত ২ মে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবন এবং পুরাতন বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটকে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য নির্ধারণ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তারপর গত ১০ মে প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত এইচডিইউকে (হাইডিপেন্ডেন্সি ইউনিট) শিশু করোনা ইউনিট হিসেবে স্থাপন করা হয়েছে। প্রথমে সেখানে ১৪টি বেড নিয়ে শুরু হলেও পরে আরও ১০টি বেড সংযুক্ত করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ১৪ বেডের সঙ্গে প্রায় প্রতিটি বেডের সঙ্গেই মনিটর থেকে শুরু করে হেড বক্স অক্সিজেন সবই রয়েছে।

ওই ইউনিটে প্রতি সপ্তাহে চারজন চিকিৎসক শিফটিং ডিউটিতে থাকছেন জানিয়ে অধ্যাপক ডা. সাঈদা আনোয়ার জানন, এই প্রথম ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই আলাদা শিশু করোনা ইউনিট করা হয়েছে। আর সব জায়গাতে সেটা অ্যাডাল্টদের সঙ্গে মেশানো। কিন্তু করোনা হাইলি কন্টাজিয়াস, বড়দের সঙ্গে শিশুদের রাখা হলে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাসহ নানা কাজে ঝুঁকি থাকে। সেসব বিষয় বিবেচনা করেই বড়দের থেকে শিশুদের আলাদা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তিনি বলেন, পুরাতন বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে যখন প্রথম করোনা রোগীদের ভর্তি করা হয় তখন এখানেও একসঙ্গেই ছিল। কিন্তু শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, বড়দের সঙ্গে একসঙ্গে রাখলে তাদের অন্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

2

তিনি আরও বলেন, একইসঙ্গে বড়দের ওয়ার্ডে শিশুরা পিপিই পরিহিত চিকিৎসক নার্সদের দেখলে তারা প্যানিক হয়ে যায়। যে কারণে ভাইটাল প্যারামিটারগুলো অ্যাসেস করা যায় না। এসব বিষয় চিন্তা করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিনকে আমি মনিটর দরকার বলে জানাই, মনিটরেই তখন সবকিছু অ্যাসেস করা যাবে। সবকিছু মিলিয়েই শিশুদের জন্য পৃথক ইউনিট চালু করার তাগিদ বোধ করি।

সব হাসপাতালেই পৃথক শিশু করোনা ইউনিট হওয়া দরকার মনে করে অধ্যাপক ডা. সাঈদা আনোয়ার বলেন, শিশুদের জন্য সাপোর্টিভ ম্যানেজমেন্ট খুব জরুরি। আর তার জন্য পৃথক ইউনিট হলে তাতে করে সবকিছুতেই সুবিধা হয়।

অধ্যাপক ডা. সাঈদা আনোয়ার বলেন, দেশে মোট জনসংখ্যার ১৫ বছরের নিচে রয়েছে ৪৫ শতাংশ। তাই এদের জন্য ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেড অন্তত প্রতিটি হাসপাতালে পৃথক করা দরকার। একইসঙ্গে দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে যদি শিশু করোনা ইউনিট খোলা হয় তাহলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওপর চাপটা একটু কমবে।