‘করোনা পরবর্তী সময়ে আস্থাহীনতা যেন তৈরি না হয়’

1করোনা মহামারি পরবর্তী বিশ্বে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখনই যথাযথ দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়া দরকার। কেননা কোভিড-১৯ ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, দারিদ্র, অর্থনৈতিক ও নারী-পুরুষ অসমতাসহ আরও নানামুখী সমস্যার জন্ম দিচ্ছে যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিশেষ চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসছে। আর তাই কোভিড পরবর্তী সময়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে রাষ্ট্র ও নাগরিক সমাজের মধ্যে যেন আস্থাহীনতা তৈরি না হয় সেদিকে নজর রাখা দরকার বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৃহস্পতিবার ( ১ অক্টোবর) ‘ভবিষ্যৎ পুনর্গঠনে মহামারি পরবর্তী বিশ্বে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের ভূমিকা’ শীর্ষক একটি ওয়েবিনারে বক্তারা এ মন্তব্য করেছেন। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ ও অস্ট্রেলিয়ার সানসাইন কোস্ট বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে।
সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ এর পরামর্শক ড. ক্যাথরিন লি-এর বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া ওয়েবিনারে অনুষ্ঠানে বক্তারা নতুন করে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন ও সংস্কার এর মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে জাতীয় পরিকল্পনার একটি অংশ হিসেবে বিবেচনা করে কোভিড পরবর্তী অবস্থায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন।
সামগ্রিক সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে এবং প্রবৃদ্ধি ঠিক রেখেই কোভিড পরবর্তী সমস্যাগুলোকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আলোকে পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে জানিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ এর ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, এ জন্য সমাজের সকল স্তরের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য একযোগে সমন্বিত প্রচেষ্টা নিতে হবে।
ইউএনডিপির বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী সামাজিক সুরক্ষার উপর জোর দিয়ে বলেন, কোভিড পরবর্তী সময়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উন্নয়ন কার্যক্রম হতে হবে পরিবেশ বান্ধব, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পক্ষপাতশূন্য।‘
কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষেত্রে গ্রিফিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তপন সরকার বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি ও সহযোগিতা ভিত্তিক পদক্ষেপ নিতে হবে যেন স্বাস্থ্য খাতের পাশাপাশি দারিদ্র, অসমতা ও শিক্ষাখাতের চ্যালেঞ্জগুলো সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার সানসাইন কোস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো ড. শরীফ আহমেদ মুকুল বলেন, কোভিড পরবর্তী নানাবিধ সমস্যা নিয়ে কাজ করার সময় পরিবেশ বান্ধব কার্যক্রম এর উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
জনগণের দাবি ও স্বার্থকে সামনে রেখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে নতুন ভাবে বিবেচনায় আনতে হবে মন্তব্য করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ পলিসি অ্যান্ড গর্ভনেন্সের (এসআইপিজি) এর সিনিয়র ফেলো শহীদুল হক বলেন, প্রয়োজনে নতুন করে বৈশ্বিক ডায়ালগ তৈরির প্রচেষ্টা হাতে নিতে হবে।
সমাপনী বক্তব্যে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, কোভিড-১৯ নানা রকম সমস্যা নিয়ে আসছে। একজন শিক্ষাবিদ হিসেবে তিনি একটি বিশাল অংশের ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা বিষয়ক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত হবার প্রতি জোর দেন। ।
ড. বুলবুল সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ পলিসি অ্যান্ড গর্ভনেন্সের পরিচালক অধ্যাপক শেখ তৌফিক এম হক, সিপিএস এর সমন্বয়ক ড. এম জসিম উদ্দিনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পেশাজীবী ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরতরা।