অ্যাম্বুলেন্সের লাইন আর স্বজনদের কান্না!

রবিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ১১টা ৫০ মিনিট। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নতুন ভবনের নিচে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স ঢুকছে। কিন্তু কোথায় যাবে? স্বজনরা এদিক-ওদিক ছুটছেন। বেড খালি নেই। করোনা ইউনিট থেকে বেরিয়ে এসে একজন স্বাস্থ্যকর্মী জানালেন, ভেতরে বেড ফাঁকা নেই। গাড়িতেই থাকতে হবে রোগীদের।

করোনা রোগী নিয়ে ঢামেক হাসপাতালের সামনে অ্যাম্বুলেন্সে এক স্বজনদুপুরে ঢামেকের নতুন ভবনের করোনা ইউনিটের সামনে দেখা গেলো এক সন্তান তার মায়ের হাত ধরে বসে আছেন, চোখে পানি। একেকজন রোগী ঢাকার আশেপাশের এলাকা থেকে সোজা ঢাকা মেডিক্যালে এসেছেন এই ভরসায় যে, একটা না একটা ব্যবস্থা হবেই। হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু আধাঘণ্টা থেকে একঘণ্টা অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে থাকতে হচ্ছে রোগীকে। আর এই সময়টা অপেক্ষা করা ছাড়া পাবেন, আর কোনও উপায় নেই স্বজনদের।

করোনা রোগী নিয়ে ঢামেক হাসপাতালের সামনে অ্যাম্বুলেন্সে এক স্বজনআগামীতে আরও জটিলতায় পড়তে হবে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, এর পর মেঝেতেও জায়গা হবে না। প্রতিরোধ করাটা বেশি জরুরি। রোগী বাইরে দাঁড়িয়ে আছে, হাসফাঁস করছে, দেখলে কান্না আটকে রাখা যায় না!

রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে রেখে পাশে দাঁড়িয়ে আছেন স্বজনরাএদিকে, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যালের নতুন ও পুরাতন বার্ন ইউনিট ভবনে একটি বেডও ফাঁকা নেই। এছাড়া ২০টি আইসিইউ এবং ৪০টি হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট থাকলেও সেগুলোর নাগাল পাওয়া যাচ্ছে না। রোগী নিয়ে রোজ হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

অ্যাম্বুলেন্সে করোনা রোগীঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রি. জে. নাজমুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আইসিইউ এবং এইচডিইউতে কোনও সিট খালি নেই। সাধারণ বেড অনেকদিন ধরে খালি নেই। করোনা ইউনিটে গাইনি এবং সার্জারি বিভাগের কিছু সিট খালি আছে; কিন্তু সেগুলো বিশেষ পরিস্থিতির জন্য খালি রাখা হয়। সেগুলোতে অন্য করোনা রোগী ভর্তি করা হয় না।’

আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকা, সিট না পাওয়া রোগীদের স্বজনরা বলছেন, আপনারা সতর্ক থাকুন। এই হয়রানি যেন আর না বাড়ে।

ছবি: নাসিরুল ইসলাম