‘অসহায়’ স্বাস্থ্যের মহাপরিচালক

চলমান লকডাউনের ভেতরে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের ঢাকায় ফেরার ঘটনায় অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম। রবিবার (১ আগস্ট) মহাখালীর বিসিপিএস মিলনায়তনে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ক্লাস উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এমন অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন।

রবিবার থেকে তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন শিল্প-কারখানা চালুর ঘোষণায় শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় ফিরছে মানুষ। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদফতরের সুপারিশ ছিল ১৪ দিনের লকডাউন কন্টিনিউ করার। সেক্ষেত্রে এটা কেন হলো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদের সুপারিশ ছিল, কিন্তু সেটা আমাকে দিয়ে আবার বলাচ্ছেন কেন, আমাকে ফাঁদে না ফেললে কী খুব সমস্যা হবে…এটা বাদ দেন।’

শ্রমিকদের এই ফিরে আসায় সংক্রমণ বাড়বে কিনা প্রশ্নে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহম্মদ খুরশিদ আলম পাল্টা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘দীর্ঘদিন মিডিয়া কাভারেজ দিচ্ছেন, মিডিয়াকে হ্যান্ডেল করছেন, এই কোভিড পরিস্থিতিতে আমার চেয়ে আপনার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। আমি আপনাদের পরে সংযুক্ত হয়েছি।’

গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারাই বলেন, যে প্রশ্নটা আমাকে করলেন এর উত্তর কী হবে।’ পরে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই বাড়বে। এর  ফলাফল যেটা হবে সেটার জন্য আমাদের যতই দোষারোপ করা হোক না, এটা তো সত্যি, আমার সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’

হাসপাতালে বেডের সীমাবদ্ধতা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের বিছানা তো রাবার নয় যে টানতে টানতে বড় হবে। বিছানা একটাও ফেলার জায়গা নাই, কোথায় আমি আর জায়গা দেবো।’

তারপরে তো শুধু কোভিড রোগী নয়, নন-কোভিড রোগীরাও আছেন। তাদের সেবাও ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে অধ্যাপক খুরশিদ আলম বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের মতো এত বড় একটা হাসপাতালকে টোটালটাই কোভিড করে দিয়েছি, তাতে কী সামাল দেওয়া যাচ্ছে? আজ একটা বিছানাও খালি নেই। তাহলে রোগীর উৎপত্তিস্থল যদি বন্ধ করতে না পারি, তাহলে এটা করে হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে বা অন্যান্য সুবিধা বাড়িয়ে খুব কি লাভ হবে?’

প্রসঙ্গত, দেশে ১ আগস্ট থেকে তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন শিল্প-কারখানা চালুর ঘোষণায় শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় ফিরছে মানুষ। গভীর রাত পর্যন্ত যাত্রীদের অস্বাভাবিক ভিড় ছিল বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌ-রুটে।

শিমুলিয়া ঘাটে আসা প্রতিটি লঞ্চে দেখা যায় যাত্রীর গাদাগাদি। ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে। উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। অতিরিক্ত যাত্রী বহন করায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে লঞ্চগুলোকে জরিমানাও করছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।