সীতাকুণ্ডে আগুন

কবে বাড়ি ফিরবেন রোগীরা?

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেসরকারি বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রোগীদের বাড়ি ফেরা নিয়ে অনিশ্চতায় রয়েছেন স্বজনেরা। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, গত ৫ দিনের চিকিৎসায় রোগীদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও কবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন, তা এখনও জানা যাচ্ছে না।

গত শনিবার (৪ মে) রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সীতাকুণ্ড উপজেলার কদমরসুল এলাকার বেসরকারি এই কনটেইনার ডিপোটিতে দুর্ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। দুই শতাধিক মানুষ আহত হলেও বর্তমানে ৮০ জনের বেশি রোগী ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বার্ন ইনস্টিটিউটের বৃহস্পতিবারের তথ্যানুযায়ী, সেখানে চিকিৎসাধীন ২০ জন রোগীর মধ্যে লাইফ সাপোর্টে থাকা একজনসহ তিন জন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা আইসিইউতে রয়েছেন। বাকিরা পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড বা পিওডব্লিউতে চিকিৎসাধীন। এসব রোগীর বেশিরভাগের দগ্ধের পাশাপাশি চোখে সমস্যাও দেখা দিয়েছে। এতে চিকিৎসার সময় প্রলম্বিত হওয়ায় রোগী নিয়ে স্বজনদের বাড়ি ফেরার অপেক্ষা দীর্ঘ হচ্ছে।

দুই ফায়ার সার্ভিস কর্মী গাউসুল আজম ও  রবিনসহ আইসিইউতে রয়েছেন মাকফারুল ইসলাম নামে এক রোগী। এই তিন জনসহ পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে থাকা অপর রোগী ফরমানুল ইসলামের অবস্থাও 'ভেরি ক্রিটিক্যাল' বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে অপারগতা প্রকাশ করে কেবল বলেন, চিকিৎসায় উন্নতি হওয়ার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

'ক্রিটিক্যাল' অবস্থায় রয়েছেন ফারুক, নজরুল, সজিব, মহিব্বুল্লাহ, রুবেল, এস কে মইনুল হক, বদরুজ্জামান রুবেল ও শরীফ। তাদের মধ্যে প্রথম তিন জনের স্বজনেরা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নজরুলের তিনটি ও সজিবের একটি অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। ফারুকের ড্রেসিং করা হয়েছে। তাদের সবারই পোড়া ও চোখের সমস্যার উন্নতির কথা জানানো হয়েছে। তবে কবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছেন।

এ ছাড়া 'স্টেবল' অবস্থায় থাকা সাত জন হলেন—এসআই কামরুল হাসান, আমিন, ফারুক, মাসুম মিয়া, সুমন হাওলাদার, জসিমুদ্দিন ও ইমরুল কায়েস। তাদের মধ্যে একাধিকজনের স্বজনরা বলেন, প্রিয় মানুষটির সুস্থতার অপেক্ষায় আছেন তারা। কবে নাগাদ তাদের নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন, এখনও অনিশ্চিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. আবুল কালাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, রোগীদের সার্বিকভাবে শারীরিক উন্নতি হয়েছে। আলাদা করে বললে, দগ্ধ রোগীদের কারও অপারেশন হচ্ছে, কারও ড্রেসিং হচ্ছে। তারা কবে ছাড়পত্র পাবেন তা এখনই নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। তবে চোখের সমস্যা সপ্তাহ দুইয়ের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে বলে চক্ষু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।

বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রোগীদের বৃহস্পতিবার (৯ জুন) দেখতে আসা চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক দীন মোহাম্মদ নুরুল হক বলেন, এখানে ভর্তি প্রত্যেক রোগীর চোখেও সমস্যা রয়েছে। এরমধ্যে কর্নিয়াসহ অন্য সমস্যাও আছে। আশা করি সবাই দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবে, আগামী সাত দিনের মধ্যে অনেক উন্নতি হবে।