সীতাকুণ্ডে আগুন

বার্ন ইনস্টিটিউটের রোগীদের শারীরিক অবস্থা জানালেন চিকিৎসক

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ ২১ জন এখনও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে দুই জন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ), একজন  কেবিনে এবং বাকি ১৮ জন পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে (পিওডাব্লিউ) আছেন।

সোমবার (১৩ জুন) দুপুরে বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য জানিয়েছেন বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. আবুল কালাম। তিনি জানান,  পিওডাব্লিউতে চিকিৎসাধীন রোগীদের সবারই শারীরিক অবস্থা ভালোর দিকে যাচ্ছে। অনেকের সার্জারি হয়েছে, কারও হচ্ছে। আইসিইউতে থাকা রোগীদের অবস্থা এখনও ক্রিটিক্যাল। তাদের মাঝেমধ্যে অক্সিজেন লাগছে, লাইফ সাপোর্টের দরকার হচ্ছে না। কেবিনের জন বয়স্ক মানুষ হলেও চিকিৎসায় উন্নতি আছে।

রোগীদের সবারই চোখে সমস্যার পাশাপাশি শরীরে আরও কিছু সমস্যা আছে জানিয়ে বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. আবুল কালাম বলেন, ‘কেমিক্যাল বার্নের কারণে রোগীদের চোখ ও শরীরের অন্য অংশে সমস্যা হয়েছে। চোখের বিষয়টি দেখছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞরা। আর আমরা দেখছি বার্নের বিষয়টি। চিকিৎসা এখনও চলছে, ছাড়পত্র দেওয়ার মতো অবস্থা হয়নি। আগামী সপ্তাহের শেষের দিকে আমরা রোগীদের ছেড়ে দিতে শুরু করতে পারবো বলে আশা করছি।’

তিনি আরও জানান, করোনা আক্রান্ত হওয়ায় খালেদুর রহমানকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে (ঢামেক) পাঠানো হয়েছিল। সেখনে তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় বার্ন ইনস্টিটিউটে এনে কেবিনে রাখা হয়েছে। আর ফায়ার সার্ভিসকর্মী রবিনের অবস্থাও উন্নতি হয়েছে, ভালো আছে। তবে তিনি এখনও আশঙ্কামুক্ত বলা যাবে না।

এর আগে রবিবার (১২ জুন) বার্ন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছিলেন, চিকিৎসাধীন রোগীদের সবারই অবস্থা মোটামুটি ভালোর দিকে। কয়েকজনের অবস্থা বেশ ভালো। তবে এই মুহূর্তে কাউকে ছাড়পত্র দেওয়ার চিন্তা করছি না। কারণ, তাদের ফলোআপ করতে হবে। ছাড়া পেলেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে চলে যাবেন, তাতে ফলোআপ চিকিৎসা ব্যাহত হবে।

বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রোগীদের স্বজনেরা পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডের সামনে অবস্থান করছেন। তাদের চোখে-মুখে এখনও প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে অজানা ভয়ের ছাপ স্পষ্ট। তারা কবে নাগাদ সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরতে পারবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন বলে জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ৪ জুন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সীতাকুণ্ড উপজেলার কদমরসুল এলাকার বেসরকারি বিএম কনটেইনার ডিপোটিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণের সময় বিস্ফোরণ ঘটলে আহত হন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ ২ শতাধিক মানুষ। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ১০ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মীর মৃত্যু হলো। আর সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৭-এ।