ল্যাবএইডের বিল দিতে হবে সেন্ট্রাল হাসপাতালকে

রাজধানীর গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে ‘ভুল চিকিৎসায়’ নবজাতকের মৃত্যুর পর প্রসূতি মাহবুবা রহমান আঁখিও মারা গেলেন। রবিবার (১৮ জুন) দুপুরে পার্শ্ববর্তী ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। নবজাতকের মৃত্যুর পর ঘটনাটি ব্যাপক আলোচনায় আসলে সেন্ট্রাল হাসপাতালকে ৭ দফা নির্দেশনা দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। দেখা যাচ্ছে, অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী, এ সংক্রান্ত সব খরচ সেন্ট্রাল হাসপাতালকে বহন করতে হবে। জানতে চাইলে ল্যাবএইড-এর জনসংযোগ কর্মকর্তা চৌধুরী মেহের-এ-খোদা দ্বীপ বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশ মেনেই সব হবে।’

এর আগে গত ৯ জুন দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে প্রসব ব্যথা ওঠায় মাহবুবা রহমান আঁখিকে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে ভর্তি করানো হয়। পরে গত ১৪ জুন (বুধবার) সেন্ট্রাল হাসপাতালে ‘ভুল চিকিৎসা’ ও কর্তৃপক্ষের ‘প্রতারণা’র অভিযোগ তোলেন তার স্বামী ইয়াকুব আলী। তিনি দাবি করেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় মারা গেছে তাদের নবজাতক সন্তানও।

ঘটনার পরপর রাজধানীর গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে সব ধরনের অপারেশন (অস্ত্রোপচার) বন্ধ, অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহাকে আপাতত হাসপাতালটির চিকিৎসা কার্যক্রমের বাইরে রাখাসহ সাত দফা নির্দেশনা জারি করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এর মধ্যে রয়েছে, মাহবুবা রহমান আঁখির পরিবারের কাছ থেকে গৃহীত চিকিৎসাবাবদ সব খরচ এবং চিকিৎসাজনিত জটিলতার যাবতীয় ব্যয় সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহন করতে হবে।

মাহবুবা রহমান আঁখিআঁখি মারা যাওয়ার পর প্রশ্ন ওঠেছে ল্যাবএইডের বিল নিয়ে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখা যায়, ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ বলছে, যদি পরিবারের জন্য বিল দেওয়া চাপের হয়, তবে তারা কমপ্লিমেন্টারি করে দেবেন। যদিও অধিদফতরের নির্দেশ অনুযায়ী, সব ব্যয় সেন্ট্রাল হাসপাতালের দেওয়ার কথা। এ বিষয়ে ল্যাবএইড-এর জনসংযোগ কর্মকর্তা চৌধুরী মেহের-এ-খোদা দ্বীপ বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশ মেনেই সব হবে।’

উল্লেখ্য, গত তিন মাস ধরে সেন্ট্রাল হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মাহবুবা রহমান আঁখি। এ সময় তার শারীরিক অবস্থা ‘স্বাভাবিক’ ছিল বলেও চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমেই সন্তান প্রসব সম্ভব বলে আশ্বস্তও করেছিলেন ডা. সংযুক্তা সাহা। প্রসব ব্যথা ওঠায় গত ৯ জুন দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তার অধীনে মাহবুবাকে ভর্তি করানো হয়। ওই সময় ডা. সংযুক্তা সাহা দেশেই ছিলেন না, অথচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনদের জানায়, সংযুক্তা সাহা আছেন এবং ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাজ করছেন। এরপর অন্য চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা ব্যর্থ হলে অস্ত্রোপচার করে বাচ্চা বের করা হয়। কিন্তু পরদিন মারা যায় শিশুটি।

আরও পড়ুন:

সেন্ট্রাল হাসপাতালের সেই প্রসূতির মৃত্যু

‘মেরে ফেলছে, আমার বোনকে মেরে ফেলছে’